ফ্যানে ঝুলছিল গৃহবধূর ওড়না প্যাঁচানো লাশ, স্বামী পলাতক
জয়পুরহাট জেলা শহরের হারাইল মুসলিম নগর মহল্লার এক বাসা থেকে ভারাটিয়ার স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার পর থেকে ওই ভাড়াটিয়া নিহত গৃহবধূর স্বামী পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ বলছে, গৃহবধূর শরীরের কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। দাম্পত্য কলহের জেরে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে।
বিজ্ঞাপন
নিহত ওই গৃহবধূর নাম কানিজ রাবেয়া (৩৫)। তিনি সফিউল ইসলামের স্ত্রী। সফিউল একটি ওষুধ কোম্পানিতে টেরিটরি পদে চাকরি করেন। তিনি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সীচা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। আর কানিজ রাবেয়া বরিশাল শহরের মকরম প্রতাপ মহল্লার হাবিবুর রহমানের মেয়ে। কানিজ রাবেয়া ও সফিউল ইসলাম উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ে এটি।
থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক খন্দকার মিজানুর রহমানের হারাইল মুসলিম নগরের বাসায় ভাড়া নেন কানিজ রাবেয়া ও সফিউল ইসলাম দম্পতি।
ভাড়া বাসায় তারা শুধু স্বামী-স্ত্রী থাকতেন। প্রায় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগে থাকতো। রোববার রাতে তারা স্বামী-স্ত্রী খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। সোমবার সকাল থেকে স্বজনেরা তাদের স্বামী-স্ত্রী কাউকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। বাসার মালিকের স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা তার কর্মস্থল কড়ই মাদরাসায় চলে যান।
কানিজ রাবেয়ার স্বজনেরা বাসার মালিকের স্ত্রী মাহবুবা সুলতানাকে মুঠোফোনে ঘটনাটি জানান। বাসার মালিকের স্ত্রী দুপুর ১২টার দিকে বাসায় এসে ভাড়ার ফ্ল্যাটে গিয়ে ওড়না প্যাঁচানো মরদেহ দেখেন। তখন কানিজ রাবেয়ার স্বামী ফ্ল্যাটে ছিলেন না। তার মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে। পরে তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে।
বাড়ির মালিকের স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা বলেন, কানিজ ও সফিউল ইসলাম গত এপ্রিল মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন। তবে তাদের মধ্যে প্রায় দাম্পত্য কলহ হতো। আজ কানিজ রাবেয়ার বাবা কল পেয়ে বাসায় গিয়ে দেখি দরজা খোলা, শোবার ঘরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় কানিজ ঝুলে আছে। এটি দেখে ভয়ে চিৎকার দিলে বাসার অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।
জয়পুরহাট থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) নাজমুল জান্নাত শাহ্ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শোবার ঘরে গৃহবধূ কানিজ রাবেয়ার লাশ ছিল। তার স্বামীকে পাওয়া যায়নি। নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। দাম্পত্য কলহের জেরে গৃহবধূ আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এমএসএ