বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীরের বক্তব্যকে পাত্তা না দিয়ে শেষ পর্যন্ত নৌকার বিজয় হবে বলে মন্তব্য করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল ৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ ফারুক। একই সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে সহায়তা করেনি।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন তিনি।

জাহিদ ফারুক বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে সহায়তা করেনি মহানগর আওয়ামী লীগ। তাতে কিন্তু কাজ হয়নি। আপামর জনগণ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থা আছে তারা কাজ করেছেন যার ফলে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।

একইভাবে এই নির্বাচনে জনগণ এবং নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পাশে থাকার কথা জানিয়ে বলেন, আমি নৌকার মনোনয়ন পেয়েছি। আমি হলাম আওয়ামী লীগের অরিজিনাল প্রার্থী।

সিটি নির্বাচনের সময় অনেকে প্রচার করেছিল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নৌকা মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর সঙ্গে নেই। কাজ হয়নি। আপনারা দেখেছেন নির্বাচনের ফলাফল। আমরা যা বলি ফলাফল দেখে বলি। আমরা গল্প বলি না।

মহানগর আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এর আগেও বলেছিল তারা মনোনয়ন পেয়ে গেছে। মিছিল নামিয়েছিল। সেতো মনোনয়ন পায়নি। মনোনয়নতো আমাকে দিয়েছে। একইভাবে দেখবেন নির্বাচনের সময় জেলা ও মহানগরের আওয়ামী লীগপন্থি নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। নেতাকর্মীরা বলছেন, তারা নৌকার প্রার্থীর জন্য কাজ করবেন। নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তারা ব্যক্তি কাউকে ভোট দেবেন না। সুতারাং ম্যাসেজটা একেবারে ক্লিয়ার।  

আগের নির্বাচনে প্রশাসন দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরার অভিযোগ তুলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির বক্তব্যের প্রশ্নে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, সাংবাদিকরা প্রশ্নগুলো করেন আমাদের বিব্রত করার জন্য। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আগেওতো অনেক বক্তব্য রেখেছেন, এগুলো নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমি নৌকার প্রার্থী, প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। বরিশালের উন্নয়নের জন্য জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে শেষবারের মতো আমাকে নির্বাচিত করে তাদেরকে সমুচিত জবাব দেবে।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন যুবলীগ নেতা নিজামুল ইসলাম নিজাম, মাহমদুল হক খান মামুন, অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান প্রমুখ।

এর আগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, আগের নির্বাচনের মতো এবার আর প্রশাসন দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরার সুযোগ দেওয়া হবে না। এবার খেলা হবে পরিচ্ছন্ন। তিনি অভিযোগ করেন, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরেন। তার দ্বারা গরিব-দুঃখি মানুষের কোনো উপকার হয়নি।

এদিকে এখন পর্যন্ত বরিশাল জেলার ৬ আসনে মোট ৪৭ প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস