‘এটা কেমন হরতাল, প্রায় সব গাড়িই চলাচল করছে’
ঢিলেঢালাভাবে বিএনপির ডাকা হরতাল কর্মসূচি চলছে দেশব্যাপী। এ কর্মসূচিতে তেমন কোনো প্রভাব দেখা না গেলেও দূরপাল্লার বাসে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং কুমিল্লার শহরতলীর সড়কগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার তিনটি আন্তঃজেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে ছোট যান এবং মালবাহী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তাছাড়াও চট্টগ্রাম, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা লোকাল বাসগুলো চোখে পড়েছে কিছুটা। তবে চালকদের অভিযোগ যাত্রী সংকটে তারাও বিপাকে আছেন।
বিজ্ঞাপন
কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া কেন্দ্রীয় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, অলস সময় পার করছেন বাসের চালকরা। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ এ টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোর একটিও ছেড়ে যায়নি। বন্ধ রয়েছে টিকিট কাউন্টারগুলো। চালকরা বসে খোশগল্পে মেতে আছেন। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেদকের।
কুমিল্লা থেকে ঢাকা রুটে চলাচলকারী রয়েল কোচ বাসের চালক আরিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হরতাল অবরোধে গাড়ি বের করা হয় না। আমরা গাড়ি চালালে বেতন পাই। ৫০০-১০০০ টাকা আয় করে সংসার চালাই। কিন্তু হরতাল বা অবরোধ কর্মসূচি থাকলে যাত্রীরা আসে না। একেকটা গাড়ির দাম লাখ লাখ টাকা। একটি গাড়ি যদি পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে মালিক এ ক্ষতি পোষাবে কী করে? গতকাল রাতে কুমিল্লায় তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিকদের এ ক্ষতিটা কীভাবে পোষাবে? আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, তিনি যেন বিরোধী দলের সাথে একটা সমাধানে এসে এসব হরতাল- অবরোধ বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন।
বিজ্ঞাপন
ফেনী রুটে চলাচলকারী তিশা পরিবহনের চালক নাসির ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে এখনও এক ট্রিপও মারতে পারিনি। আগে গাড়িটা নিয়ে ১০ মিনিট দাঁড়ালেই যাত্রী ভরে যেত। কিন্তু আজকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রী পূরণ করতে পারছি না।
ঢাকা অভিমুখে চলাচলকারী লোকাল বাস তিশা পরিবহনের চালক জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা কেমন হরতাল, প্রায় সব গাড়িই চলাচল করছে। শুধু দূরপাল্লার বাসে যাত্রী কম থাকে। কুমিল্লা থেকে ঢাকায় একবার যাত্রী আনা-নেওয়া করলে ১৫-১৮ হাজার টাকার মতো আয় হতো। কিন্তু আজ মাত্র ৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে। গাড়ির গ্যাস খরচ ৪ হাজার টাকা। মালিককে দেব কী আর নিজেরা নেব কী?
পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাত্রী কম থাকলে গাড়ি ছাড়েন না স্টাফরা। গাড়িতে প্রচুর খরচ। আমাদের (মালিক সমিতির) পক্ষ থেকে গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত বহু আগের। এটা এখনো বহাল আছে।
আরিফ আজগর/আরএআর