আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় প্রার্থী হতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে মনোনয়পত্র দাখিল করেন রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার। একটি মামলা সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ না করায় তার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। 

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এদিকে গতকাল রোববার সকালে রংপুর-৫ আসনের প্রার্থী যাচাই-বাছাই শেষে জাকির হোসেন সরকারের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছিল। 

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বিগত ২০০১ সালের ওই মামলাটিতে উল্লেখিত নামের সঙ্গে আমার নামের ও ঠিকানায় মিল নেই। অতএব ওই মামলাটি আমার না। আমি মনোনয়ন ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনের আপিল বিভাগে যাব। 

তিনি অভিযোগ করেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাকে বসিয়ে রেখেছিলেন। তার কোনো কথা না শুনে এবং মামলার কাগজপত্র না দেখেই তিনি মনোনয়ন বাতিল করেছেন। অথচ একই রকম অভিযোগে রংপুর-আসনের প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙ্গাকে এর আগে বৈধ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা চাইলেই সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতিকে ক্ষমা সুন্দরভাবে নিতে পারতেন।  

এর আগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জাকির হোসেন সরকার তার মনোনয়ন ফরম বৈধ ঘোষণা করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে একাধিকবার অনুরোধ করেন। সেখানে উপস্থিত থাকা তার পক্ষের লোকজনও জাকির হোসেন সরকারের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করার জন্য জোর দাবি জানান। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোবাশ্বের হাসান ও জাকির হোসেনের মধ্যে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেই যুক্তি খণ্ডন হয়। 

পরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জাকির হোসেন সরকার মনোনয়ন ফরমে একটি মামলার তথ্য না দেওয়ার কারণে মনোনয়ন স্থগিত করার পর  সোমবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এ সময় আরপিও অনুযায়ী জাকির হোসেন সরকারকে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্ত হবার পরামর্শ দেন তিনি। 

উল্লেখ্য, জাকির হোসেন সরকার মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের পর পর দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। 

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমানের ছেলে রাশেক রহমান। এছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিছুর রহমান। অন্য প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহবুবুর রহমান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আব্দুল হালিম মণ্ডল, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক, জাকের পার্টির শামীম মিয়া এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের (বিএনএফ) আবদুল বাতেন। 

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।  

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর