ভিক্ষার চাল চুরি হয়ে যাওয়া কুলসুম বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম

যশোরের মণিরামপুরে ভিক্ষার চাল চুরি হয়ে যাওয়া কুলসুম বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম। 

বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার ভরতপুর গ্রামে ভিক্ষুক কুলসুমের বাড়িতে যান চেয়ারম্যান। পরে ভিক্ষুকের হাতে চাল, ডাল, তেল ও  নগদ অর্থ তুলে দেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর গ্রামের ইজ্জত আলীর স্ত্রী ভিক্ষুক কুলসুম বেগম প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ৪-৫ কেজি চাল পান এবং ব্যবহারের জন্য কয়েকজন তাকে পুরোনো কাপড় দেন।

বিকেলে তিনি ভিক্ষার চালসহ পুরোনো কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে পৌর শহরের চালপট্টিতে যান তিনি। সেখানে চাল বিক্রেতার পাশে চাল ও পুরোনো কাপড়ের ব্যাগ রেখে আশপাশে ভিক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখেন চালসহ পুরোনো কাপড়ের ব্যাগ নেই।

এ সময় তিনি অঝোরে কাঁদতে থাকেন। পরে ব্যবসায়ীসহ উপস্থিত সবাই জানতে পারেন ভিক্ষার চালসহ কাপড়ের ব্যাগ চুরি হয়ে গেছে তার। এ সময় তার আহাজারিতে ব্যবসায়ীসহ উপস্থিত অনেকেই কষ্ট পান।

ভিক্ষার চাল চুরি হয়ে যাওয়া কুলসুম বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম

এ ঘটনায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট ‘চাল চুরি হওয়ায় কাঁদছেন কুলসুম’ শিরোনামে নিউজ প্রকাশ করে। নিউজ প্রকাশের পরই মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম ভিক্ষুক নারীর পাশে দাঁড়ালেন।

মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, আমাদের সমাজে দিন দিন নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। একজন ভিক্ষুকের চালও চুরি হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন পত্রিকায় খবরটি পড়ে আমি মর্মাহত হই। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওই ভিক্ষুকে ২০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, দুই কেজি আলু, তেলসহ কিছু সবজি কিনে দিয়েছি। তাছাড়া সরকারি যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার যোগ্য তাকে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে দিতে বলেছি। 

ভিক্ষুক কুলসুম বেগম বলেন, সোমবার প্রতিবেশী একজনের কাছ থেকে চাল নিয়ে রান্না করে খেয়েছি। মঙ্গলবার ভিক্ষার ওই চাল থেকে তা শোধ করার আশা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না। প্রায় এক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও চাল ও পুরোনো কাপড়ের ব্যাগের খোঁজ পাইনি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা আপা আমাকে সহায়তা করেছেন। আমি এতে খুব খুশি।

জাহিদ হাসান/এএম