দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হলো প্রাবাসী সানাউল্লাহর। হেলিকপ্টারে চড়ে পরিবারসহ নিজ গ্রামে এসেছেন আমেরিকান এই প্রবাসী। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার উত্তর মুমুরদিয়া গ্রামের বাড়ির পাশের জমিতে হেলিকপ্টার নিয়ে অবতরণ করেন।

হেলিকপ্টার আসার সংবাদ শুনে এলাকার হাজারো মানুষ ভিড় করেন। এসময় তাদের দেখতে গ্রামের লোকজন আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন। সানাউল্লাহ তার স্ত্রী বন্যা অর্পনা, সানিয়া ঈদনাত ( ১০) ও ছেলের নাম ইহান (৬) আমেরিকা থেকে বিমানে করে হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এরপর হেলিকপ্টারে চড়ে নিজ গ্রামে অবতরণ করেন।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের উত্তর মুমুরদিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত রহমতুল্লাহ ছেলে সানাউল্লাহ। তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করেন। সেখানে তিনি ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসীরা জানান, গত কয়েকদিন যাবৎ এই নিয়ে কথা হচ্ছে। হেলিকপ্টারে সানাউল্লাহ আমেরিকা থেকে আসার খবর  আমাদের পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই তাকে দেখতে ভিড় জমান শত শত উৎসুক নারী-পুরুষ।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় কটিয়াদী উপজেলার উত্তর মুমুরদিয়া গ্রামের বাড়ির পাশের জমিতে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। এ সময় প্রবাসী সানাউল্লাহ তার স্ত্রী বন্যা অর্পনা, মেয়ে ইবনাত ও ছেলে ইহানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তাদের আত্মীয়-স্বজন , শুভাকাঙ্ক্ষী ও এলাকাবাসী।

পার্শ্ববর্তী গ্রামের মোখলেসুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও হেলিকপ্টার আসার খবর শুনে আমরা ছুটে এসেছি দেখতে। গ্রামের মাঝে একটি হেলিকপ্টার এলে সাধারণত মানুষের মধ্যে দেখার কৌতূহল জাগে। গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চারাও আসছে দেখতে মুরব্বিরাও দেখে খুশি। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সাবেরী এসময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মুমুরদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. লিটন সূত্রধর, মুমুরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য মজিবুর রহমান, ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আবু তাহের, ৬নং ওয়ার্ড সদস্য শাহাবুদ্দীন, ৪নং ওয়ার্ড সদস্য লিটন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাসী সানাউল্লাহ বলেন, আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসতে দীর্ঘ ৩৪ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। পরে পরিবারের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে এসেছি। আমি আমার অনেকদিনের স্বপ্ন আমার স্ত্রী সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে গ্রামে আসব। আজ আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বাড়িতে আসা হয় না অনেকদিন যাবৎ। দীর্ঘদিন পরে বাড়িতে এসেছি, এখন অনেক ভালো লাগছে। এলাকার লোকজন আসছে আমাদের দেখতে অনেকের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি ভালো লাগছে। 

মুমুরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সাবেরী বলেন, আমাদের গ্রামের মানুষ হেলিকপ্টারে আসবে শুনে আগে থেকেই এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে। এই উৎসুক জনতাকে সামাল দিতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গ্রাম পুলিশ সহায়তা করেছে। এছাড়া সানাউল্লাহ আমাদের গ্রামের সন্তান। সে নিয়মিতই এলাকার গরিব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এলাকার উন্নয়নে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল। আশা করি সামনেও এলাকার উন্নয়নে সে কাজ করবে। 

এনামুল হক/আরকে