যন্ত্রের সাহায্যে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে একটি গাছ লাগানো যাবে। এমনি এক কৃষি যন্ত্রের উদ্ভাবন করেছেন যশোরের শার্শার মিজানুর রহমান। মেশিনটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে তিনি সফলতাও পেয়েছেন।  

কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে এই মেশিনের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে একদিকে বৃক্ষরোপণ বাড়বে অন্যদিকে সময়ও বাঁচবে।

মিজানুর রহমান বলেন, চলতি বছরে গ্রীষ্মকালে যশোরে প্রচুর পরিমাণে তাপদাহ হয়েছিল। মূলত পরিবেশে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আবহাওয়া বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। আধুনিক যুগে মানুষ প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় মাটি খুঁড়ে বৃক্ষ রোপণে অনেকের অনীহা রয়েছে। ঠিক এমন সময় প্রযুক্তি নির্ভর বৃক্ষরোপণের কথা ভেবে মিজান তৈরি করেছেন সৌর বিদুৎ চালিত মাটি খোঁড়ার যন্ত্র। এটি দিয়ে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে এক থেকে দেড় ফুট মাটি খুঁড়ে একটি বৃক্ষরোপণ করা সম্ভব। অর্থাৎ দিনে একজন মানুষ এই যন্ত্রটির সাহায্যে ৩০০ থেকে ৫০০ গাছ লাগাতে পারবে। 

উদ্ভাবক মিজান জানান, তার এই যন্ত্রটি তৈরি করতে প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এটিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি মোটর, ১২ ভোল্টের চারটি ব্যাটারি এবং কন্ট্রোলার ও সোলার প্যানেল। বাণিজ্যিকভাবে যন্ত্রটি তৈরি করা গেলে উৎপাদন খরচ আরও কম হবে বলেও জানান তিনি।

মিজানের পার্শবর্তী এক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, মিজান ভাই এর আগে অনেক কিছু তৈরি করেছেন। সে যা কিছু তৈরি করেছে সবকিছুই দেশীয় প্রযুক্তিতে। এগুলো তৈরি করে তিনি শতভাগ সফল হয়েছেন। 

আলমগীর হোসেন নামে শ্যামলাগাছির এক বাসিন্দা বলেন, কয়েকদিন ধরে মিজান ভাই এই মাটি খোড়া যন্ত্রটি তৈরির কাজ করছিলেন। অবশেষে এটি যখন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হলো তখন আমরা দেখে অবাক হয়েছি। আশ্চর্যের বিষয় হলো এটি দিয়ে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে একটি বড় গর্ত খুঁড়ে একটি গাছ লাাগনো যায়। যেখানে আমাদের হাত, শাবল, কোদাল দিয়ে একটি গর্ত খুঁড়তে ১০ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগতো।

শার্শা উপজেলার সহকারী কৃষি অফিসার অমল কৃষ্ণ পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিজান যে যন্ত্রটি তৈরি করেছে সেটি সৌরবিদ্যুৎ চালিত এবং পরিবেশবান্ধব। এটি একটি কৃষি যন্ত্র। এটি দিয়ে দ্রুত মাটি খুঁড়ে গাছ লাগানো সম্ভব। আমরা এটা নিয়ে আরও গবেষণা করছি, কিভাবে কৃষকদের মাঝে এই যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়েও খোঁজ খবর নিচ্ছি। 

উদ্ভাবক মিজানুর রহমান এর আগে ২০২০ সালে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক পেয়েছেন। 

এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে