সড়ক দেবে ঘটছে দুর্ঘটনা, খালে বিলীন হওয়ার শঙ্কা
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার টগরা-ইন্দুরকানী-কলারণ-সন্নাসী সড়ক। এটি এ উপজেলার প্রধান সড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, ইজিবাইকসহ ৫০০ এর অধিক যানবাহনে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ চলাচল করেন। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের ঘোষেরহাট এলাকায় সড়কে ফাটল ধরে একাংশ দেবে গেছে। ফলে প্রায়ই যাত্রীবাহী যান উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক যান চলাচল। দ্রুত সড়কটি সংস্কার না করা হলে খালে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, চার মাস আগে টগরা-ইন্দুরকানী-কলারণ-সন্নাসী সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হয়। কাজ শেষ হওয়ার কিছু দিন পরে উপজেলার ঘোষেরহাট এলাকার জাকির হোসেনের বাড়ির সামনের সড়কের ৩০০ ফুট জায়গায় ফাটল ধরে। এরপর সড়কের ওই অংশ দেবে যায়। ফলে একসঙ্গে দুটি গাড়ি সড়ক দিয়ে যাওয়া-আসা করতে পারছে না। এ সড়কটি উপজেলার প্রধান সড়ক। উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরে, হাসপাতাল, হাট বাজার ও ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয় এ সড়ক দিয়ে। এ ছাড়া বাগেরহাটের শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এ সড়ক দিয়ে লোকজন যাতায়াত করেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এ সড়কটির ঘোষেরহাট এলাকার কয়েকটি স্থানে বড় বড় ফাটল ধরেছে। এসব ফাটলের কারণে সড়ক একদিকে দেবে গেছে। কোথাও বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। সড়কটির এ অংশ দিয়ে একটি গাড়ি চলাচল করলে আরেকটি গাড়ি অপেক্ষা করতে হয়। একসঙ্গে দুটি গাড়ি চলতে পারে না। সড়কটি একদিকে দেবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করার সময়ে অনেকটা হেলে যায়।
বিজ্ঞাপন
উপজেলার ঘোষেরহাট গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, সড়কটি দেবে যাওয়া অংশ দ্রুত সংস্কার না করা হলে ভেঙে খালে বিলীন হয়ে যাবে। ভেঙে যাওয়া সড়কে প্রায়ই যানবাহন উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে একটি ইজিবাইক উল্টে দুই জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার তামান্না আক্তার জানান, তার বাড়ি বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে হলেও পিরোজপুর শহর কাছাকাছি হওয়ায় প্রয়োজনীয় সব কাজ এখান থেকেই করেন। পড়াশোনা করেন পিরোজপুরের সোহরাওয়ার্দী কলেজে তাই প্রায় প্রতিদিনই তাকে পিরোজপুর শহরে যেতে হয়। এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় প্রতিদিনই তাকে ইজিবাইক উল্টে আহত হওয়ার আতঙ্কে থাকতে হয়।
ইন্দুরকানী গ্রামের আতিক সরদার বলেন, আমি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি মেরামতের কাজ করি। কাজের কারণে প্রায়ই মোটরসাইকেল নিয়ে এ সড়কে চলাচল করতে হয়। সড়কটি দ্রুত মেরামত করা না হলে ভবিষ্যতে অনেক বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে।
ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক হাফিজুল ইসলাম বলেন, সড়কটি ভেঙে দেবে যাওয়ার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুটি গাড়ি একসঙ্গে চলতে পারে না। আমাদের ইজিবাইকগুলো হালকা হওয়ায় ভাঙা অংশ দিয়ে যেতে গেলে কাত হয়ে উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিন মাস ধরে সড়কটি বেহাল হয়ে আছে। অথচ সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।
ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম মতিউর রহমান বলেন, টগরা-ইন্দুরকানী-কলারণ-সন্নাসী সড়কটি উপজেলার প্রধান সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাকসহ কয়েক শ যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির ফাটল ধরা অংশ দ্রুত সংস্কার করা না হলে খালে বিলীন হয়ে যাবে। তখন উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, খালের ভাঙনের কারণে সড়কটির ওই অংশে ফাটল ধরেছে। মেসার্স মাহফুজ খান লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের সংস্কার করেছে। আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামত করে দিতে বলেছি। শীঘ্রই তারা কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন।
এএএ