রাত ৮টার দিকে মুঠোফোনে কল করে এক বন্ধুকে স্কুল মাঠে ডেকে নিয়ে যান আরেক বন্ধু। তারপর সেখানে একত্রিত হতে থাকেন আরও কয়েকজন। এরপর সবাই মিলে আড্ডা দেন রাত ১০টা পর্যন্ত। এরপরই সেই বন্ধুকে মারপিট করে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ দিয়ে অপহরণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তারপর সেই বন্ধুর মোবাইল থেকেই তার বাবাকে কল দিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয় ৩০ লাখ টাকা। 

পরে পরিবারে পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর অভিযানে নামে পুলিশ। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ১০ ঘণ্টার মধ্যেই আটক করা হয় সৈকত শেখ (২০) নামে অপহরণকারী বন্ধুকে। উদ্ধার করা হয় অপহৃত রিপনকে। 

ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বড়পাঙ্গাসী এলাকা থেকে সৈকতকে আটক করা হয়। সৈকত ওই এলাকার মৃত মান্নান শেখের ছেলে। 

ওইদিন রাতেই হাত-পা ও মুখ বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ লাগানো অবস্থায় অপহৃত রিপনকে উপজেলার বড়পাঙ্গাসী গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। রিপন একই এলাকার জিলহক প্রামানিকের ছেলে। 

উল্লাপাড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত কুমার সূত্রধর ঢাকা পোস্টকে বলেন, রিপনকে অপহরণ করে তার বাবাকে ফোন দিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে মর্মে তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে অভিযানে নামে পুলিশ। 

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে রিপনের বড় ভাই বিদেশ থেকে দেশে আসে। তাই অপহরণকারীরা মনে করে রিপনদের কাছে অনেক টাকা আছে। তাই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে রিপনকে তার কতিপয় বন্ধু বড়পাঙ্গাসী স্কুল মাঠে ডেকে নেয় এবং রিপনকে অপহরণ করে। এরপর তারা রাত ১০টা পর্যন্ত তার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে তাকে মারধর করে অপহরণ করে। পরে রিপনের মুঠোফোন থেকেই তার বাবাকে কল দিয়ে তার কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

এমতাবস্থায় রিপনের পরিবার শুক্রবার সকালে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। পরে পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাত্র ১০ ঘণ্টার মধ্যেই হাত-পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় অপহৃত রিপনকে উপজেলার বড়পাঙ্গাসী গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির পাশ থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সৈকত নামে এক অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশ।

অমৃত কুমার সূত্রধর আরও বলেন, তাকে উদ্ধারের পরে এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আটক সৈকতকে আজ শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর