বড় করে বিক্রি করার জন্য এক সঙ্গে কয়েশ লেয়ার কিনেছিল বিনিময়। বিক্রি করতে গিয়ে দেখল একটি বাচ্চা মোরগ। সেটাকে আর বিক্রি করল না। সেটার বাড়তি যত্ন করতে লাগল। এরপর আরও কয়েকবার বাচ্চা কিনে এনে বিক্রি করল সে। কিন্তু, তখনও রেখে দিল মোরগটিকে। 

এক পর্যায়ে পরিবারের চাপে বাচ্চা কেনা বেচা বন্ধ করে দিতে হলো তাকে। কিন্ত, তখনও সে রেখে দেয় মোরগটিকে। এভাবেই মোরগটির প্রতি ভালোবাসা জমতে থাকে বিনিময়ের। মোরগটির বয়স এখন দেড় বছর। পরিবার থেকে বার বার জবেহ করার নির্দেশ আসছে। কিন্তু, সে মানতে রাজি নয়। অগত্যা মোরগটিকে ১ হাজার টাকায় কিনে নিতে চাই তার বাবা। তারপরেও সে নারাজ। তার ভালবাসায় বহুবার ছুরির নিচে থেকে ফিরে এসেছে মোরগটি।

জামালপুরের পাথালিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মফিজুল হকের ছেলে বিনিময়ের (১৪) মোরগের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসী।

বিনিময় স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। আরও ছোট থেকে তার পশু পাখি লালন পালনের শখ। মা-বাবার দেওয়া টিফিন খরচ ও নানি দাদির দেওয়া বকশিস জমিয়ে সে কয়েক বছর আগে একজোড়া কবুতর কিনে। এরপর থেকে বাড়তে থাকে তার কবুতরের সংখ্যা। এক পর্যায়ে কবুতরের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে টিয়া পাখি ও লেয়ার। বাড়ির ছাদে তৈরি হয় তার ছোট্ট খামার। তার শখে পরিবারের পক্ষ থেকে বাধা নিষেধ আসলেও সে তা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। একপর্যায়ে পশু পাখির প্রতি তার এ ভালোবাসা দেখে শিথিল হয় পারিবারিক চাপ। 

গত বছর লকডাউনে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে বিনিময়ের এ শখ মজবুত হয়ে উঠে। সেই থেকে চলে আসছে আজবদি। পশু পালন করে সে লাভের চাইতে আনন্দই বেশি পায়। তাই, লাভের মুখ খুব একটা দেখেনি সে। তারপরেও পরিবারের চাপের মুখে ছোট পরিসরে ধরে রেখেছে তার শখটি।

বিনিময় জানায়, স্কুল বন্ধ! পড়াশোনার চাপও খুব একটা নেই। এছাড়া পশু পাখির সঙ্গে থাকতে আমার খুব ভাল লাগে। তাই, আমি এসব করি। পশু পাখি লালন পালন করে আমার খুব একটা লাভ হয়নি। বরং ক্ষতির মুখে আছি। পড়াশোনার ফাঁকে যদি সম্ভব হয় তাহলে ভবিষ্যতে তার এ শখ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে, বিনিময়ের আশা। 

এমএএস