যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম (ছবি- সংগৃহীত)

নাটোরের লালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতা-কর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নাটোরের গোপালপুর থানার পুকুরপাড়া চিলান এলাকার বাসিন্দা সেকেন্দারের ছেলে করিম, বানুর ছেলে মতি সরদার, মিজানুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম আজাদ প্রিন্স, তৈয়ব সরদারের ছেলে মকলেছ সরদার, মকলেছ সরদারের ছেলে মহসিন, সেকেন্দারের ছেলে খলিল, রুস্তম আলী প্রাংয়ের ছেলে রানা, ফজরের ছেলে আনিসুর, লুৎফর প্রাংয়ের ছেলে আ. রাজ্জাক, শাহজাহানের ছেলে জার্জিস, আন্দুরুর ছেলে মো. কালাম, মাজদারের ছেলে মিজানুর রহমান ও কুদ্দুস প্রাংয়ের ছেলে সানা প্রাং।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় হয়। এই রায়ের পর করিম, মতি সরদার, আবুল কালাম আজাদ ওরফে প্রিন্সসহ মোট ৬২ জন দাঙ্গা-হাঙ্গামা করার লক্ষ্যে লাঠি, চাইনিজ কুড়াল, রামদা, লোহার রড, চাপাতি, ডেগার, হকিস্টিক, হাসুয়া, দা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কদিমচিলান বাজারের বাসস্ট্যান্ডে একত্রিত হয়ে মিছিল বের করে।

এ সময় তারা গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে আসামিরা স্থানীয় আব্দুল জলিলের বাড়িতে প্রবেশ করে অতর্কিত আক্রমণ করে। তারা আব্দুল জলিলের ঘরের আসবাবপত্র ও অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে। এ সময় আব্দুল জলিলের স্ত্রী মাজেদা বেগম আসামিদের বাধা দিলে আসামি মহসিন তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে মাজেদা বেগমের মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় অন্য আসামিরা মাজেদা বেগমকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করে।

এ সময় আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রীর চিৎকারে খায়রুল ইসলাম এগিয়ে গেলে আসামিরা তাকে ঘিরে ফেলে। আসামি মতি তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে খায়রুলের ঘাড়ে কোপ দিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। আহত খায়রুলকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়াইগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। 

এ বিষয়ে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বলেন, যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম হত্যা মামলায় ৬২ জন আসামির মধ্যে জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতে কয়েকজন আসামি উপস্থিত থাকলেও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় পলাতকদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা ইস্যু করার আদেশ দেন আদালত।

শাহিনুল আশিক/এমজেইউ