ধান আবাদে কৃষকের স্বপ্নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন রোগ। এর ফলে ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জমির ফসল। যথাসম্ভব সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেও ঠেকানো যাচ্ছে না রোগের বিস্তার। রোগটি নতুন হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বছর পরিবারের চালের চাহিদা মেটাতে ও পরবর্তীতে আবাদ করতে বোরো মৌসুমে ধান চাষ করেন কৃষক। এ সময়ে নিজেদের খাবারের জন্য রেখে বাকি ধান বিক্রি করে পরবর্তী আবাদে যান কৃষক। 

কিন্তু এবার পরবর্তী আবাদ নিয়ে শঙ্কায় ধানচাষিরা। উৎপাদিত ধান ঘরে তোলার পূর্বেই দেখা দিয়েছে নতুন রোগ।

সাধারণত এ সময় আটাশ, বারি ৪৮, ৫৮-সহ বিভিন্ন ধরনের ধানের আবাদ হয়। মাঠজুড়ে সোনালি হাসিতে জেগে ওঠে ধানের জমি। কিন্তু এবার সেই হাসিতে নেমে এসেছে মলিনতার ছাপ।

দানা না বাঁধা ধান দেখাচ্ছেন কৃষক

নতুন রোগের প্রাদুর্ভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জমির ধান। গাছ ভালো, শীষ বিবর্ণ হয়ে দানা বাঁধছে না ধান। গাছ ভালো থাকলেও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধানের শীষ। ইতোপূর্বে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়নি ধানচাষিরা। নতুন এ রোগের কার্যকর সমাধান দিতে কৃষি বিভাগ পারছে না বলে চাষিদের আভিযোগ।

মেহেরপুরের চাদবিল গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন জানান, তিন বিঘা জমিতে ২৮ ধানের আবাদ করেছি। কিন্তু এ বছরে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। ধানগাছ থেকে এ বছর গরুর জন্য বিচালিও করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন কোম্পানি ও এলাকার সার-বিষের দোকান থেকে পরামর্শ নিয়ে বিষ প্রয়োগ করেও সমাধান হচ্ছে না।

কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, রোগটি ইতোপূর্বে কখনও দেখেননি। সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেও উপকার পাওয়া যাচ্ছে না । জমি থেকে ন্যূনতম ফসলও পাবেন না বলে জানান তিনি। তার মতো শত শত চাষিরা এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের স্বপন কুমার খাঁ জানান, মেহেরপুরে ধানের আবাদ ভালো। গড়ে প্রায় ১৯ হাজার ১০০ হেক্টর  জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়েছে। তাপমাত্রা যখন ৩৫ ডিগ্রির বেশি হয় তখন গরমে ধানের শীষগুলো চিটে হয়ে যায়। এটা মূলত জলবায়ুগত সমস্যা।

কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, জমিতে সেচের পাশাপাশি যেসব ধানে পুরোপুরি থোড় আসেনি সে সব জমিতে বিঘাপ্রতি ৫ কেজি পটাশ সার দেওয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। করোনার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

মুস্তাফিজুর রহমান/এমএসআর