যতক্ষণ নিশ্বাস আছে ততক্ষণ ভোটের মাঠ থেকে কেউ সরাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে বগুড়ার সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি এলাকার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

এরে আগে সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের মুরাদপুর বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন হিরো আলম। পরে রাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেন, সন্ধ্যায় মুরাদপুর বাজারে কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে যাই। কিন্তু বাজারে প্রচারণার কাজ শুরু করার আগেই নৌকার কয়েকজন সমর্থক এসে বাধা দেন। তারা বলেন, এখানে নৌকার প্রচার হবে। আর কারও প্রচার হবে না। তোরা এখান থেকে চলে যা। তার মানে এরা নৌকার লোক, মানে তানসেনের লোক। ওই সময় একজন বাঁশ নিয়ে এলো। তখন আমার একজন লোক বলল ভাই আপনারা এমন করছেন কেন? এ কথা বলার পাশাপাশি মোবাইল দিয়ে ভিডিও, ছবি নিতে থাকে। এটা দেখে তারা সেই মোবাইল কেড়ে নেয়। ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। তখন অবস্থা দেখে আমি নন্দীগ্রাম থানার ওসিকে ফোন দেই। তিনি এসে সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে শুনেছেন। তারাও বলেছে এখানে ঝামেলা হয়েছে। এলাকার লোক সাক্ষ্য দিছে। 

তিনি আরও বলেন, ওখানে পাঁচজন ছিল। তাদের নাম পেয়েছি। একজন হলেন- কাওসার, আরেকজনের নাম সাইদুল। তারপর আলম, মাহিন। আরেকজন ছিল জাহিদ। এই পাঁচজন লোক গণ্ডগোল করার চেষ্টা করেছে।

ডাব প্রতীকের প্রার্থী হিরো আলম বলেন, এখনই যদি নৌকার লোক প্রচারণায় বাধা দেয় তাহলে নির্বাচনের দিন কী হবে? এরা জানে নির্ঘাত আমি গতবার ভোটে পাস করেছি। আমি ভোট পেয়েছি। এই নৌকার লোকজন জোর করে ফেল করায়ছে। এবারও আমি ভোটে পাস করতে পারবো। আমাকে লোকজন বলেছে তোমাকে একবার ভোট দিয়েছি। তাদের বলেছি আরও একবার সুযোগ দেন। আপনাদের কাছে আরেকবার ভোট চাই। তারা আমাকে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে। গণজোয়ার আসতেছে। তারা (নৌকার লোকজন) দেখেছে, বুঝতে পেরেছে। এ জন্য এখন থেকেই আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করেছে।

হিরো আলম বলেন, যতক্ষণ নিঃশ্বাস আছে ততক্ষণ আমাকে কেউ দমাতে পারবে না। ভোটের মাঠ থেকে সরাতে পারবে না। হিরো আলম মৃত্যুকে ভয় পায় না। সত্যের পথে আছি, থাকব। ভোটের দিন পর্যন্ত মাঠে থাকব। যতক্ষণ পর্যন্ত ফলাফল ঘোষণা না হবে মাঠে থাকব। প্রয়োজনে লাশ হয়ে ফিরব, তবু ফলাফল নিয়ে আসব।

হামলাকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে পেরেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনো জানতে পারিনি। ওখানে হট্টগোল হওয়ার পর আর রাজনৈতিক পরিচয় জানার সুযোগ পাইনি। তবে এই পরিচয় জানতে পারবেন নন্দীগ্রাম থানার ওসি। তাকে বলেছি আজকে রাতের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

নন্দীগ্রাম থানার ওসির সঙ্গে হামলার বিষয় নিয়ে কথা হলেও এখনও লিখিত অভিযোগ করেননি হিরো আলম।
এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, পুলিশ প্রহরা দিয়ে সারাদিন ভোটের প্রচার করতে হয় এটা কেমন কথা ভাই? পুলিশ বাহিনী নিয়ে কেন ভোটারদের কাছে যেতে হবে?

নন্দীগ্রাম থানার ওসি আজমগীর হোসাইন বলেছেন- মুরাদপুর বাজারে গণ্ডগোলের তেমন সত্যতা পাননি। 

এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, আমার কাছে যে ফুটেজ ছিল তা উদ্ধার করি। তাহলে তো বোঝা যাবে আমরা সত্যি বলছি না মিথ্যা। আর আপনারা একটা বিষয় জানেন পুলিশ সব কিছুতে একটু এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এই হামলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত এখনো নেননি হিরো আলম। তবে সংবাদ সম্মেলনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের পর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ডাব প্রতীকের এই প্রার্থী।

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/আরএআর