নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোরশেদ আলমকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সেনবাগ উপজেলায় সেনবাগ পৌর শহরের দক্ষিণ বাজার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা চত্বরে এসে শেষ হয়।

অভিযোগ করা হয়, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলমকে প্রাণনাশের হুমকি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পরে রাতে সেনবাগ উপজেলায় সেনবাগ পৌর শহরে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এসময় বেঙ্গল গ্রুপ ও আর টিভির পরিচালক সাইফুল আলম দীপু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কবির, সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাসের দুলাল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম জাকারিয়া আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক সাহজাহান পাটোয়ারী, আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা আবু শোয়েবসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ ডিসেম্বর  শুক্রবার দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক সেনবাগের ছমির মুন্সির হাটের পাশে তার প্রতিষ্ঠিত লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থনের এক অনুষ্ঠানে মোরশেদ আলমকে প্রকাশ্যে প্রাণনাসের হুমকি দেন। তিনি তার বক্তব্যে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হীনতায় কথা উল্লেখ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার আবেদন জানান।

জানা গেছে, লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তারপর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান মানিকের কাঁচি প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন। গত শুক্রবার দুপুরে নিজের অনুসারীদের নিয়ে কাঁচি প্রতীকের সমর্থনে নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজে’ এক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় মোরশেদ আলমকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন জাহাঙ্গীর আলম মানিক। এ ধরনের একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। 

বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে ফেলবো আপনাকে। আজ আমরা সেনবাগের আওয়ামী লীগ ঐক্য। বাড়ি ফেরা না পর্যন্ত আমরা ঐক্য। আমাদের বিজয় আমরা সুনিশ্চিত করবো। আজকে সময় এসেছে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার। সুতরাং আপনাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই। যদি কেউ ব্যালটে হাত দিতে আসে তাহলে তার জবাব হবে বুলেটের মাধ্যমে। আমরা যদি শুধু টাকার উপর নির্ভরশীল থাকি তাহলে আমাদের নেতাকে (আতাউর রহমান ভূইয়া) জিতাতে পারবো না।

অভিযোগের বিষয়ে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, ফেসবুকে একজন কর্মকর্তার নিউজের একটি বক্তব্যের সূত্রধরে আমি একটি কথা বলেছিলাম। কিন্তু নৌকা প্রতীকের লোকজন সে সংবাদের খণ্ডিত অংশটুকু ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নোয়াখালী-২ আসন থেকে আমরা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকটি ঘটনায় একাধিক প্রার্থী ও সমর্থককে শোকজ করা হয়েছে। প্রার্থীদের অভিযোগগুলো আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

হাসিব আল আমিন/এমএসএ