সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর এবং বিশ্বম্বর উপজেলা) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কোনো সচিব বা পিএসসির কোনো সচিব নির্বাচন করছে না। আমি অবসর গ্রহণ করেছি। সুনামগঞ্জের ধারারগাঁওয়ের সাধারণ একজন নাগরিক সংসদ নির্বাচন করছে। বরং আমার কর্মীরা প্রেসারের মধ্যে আছে। কেননা এটা তো সত্য তিনি (পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ) এখনো সংসদ সংসদ এবং আমি তার সঙ্গে নির্বাচন করছি। সরকারি কর্মচারীরা আমার পক্ষে অবস্থান নেননি। এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ শুনলে দুঃখ লাগে।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে রোববার (২৩ ডিসেম্বর) সরকারি কর্মকর্তারা নৌকার পক্ষে কাজ করছেন বলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের কাছে অভিযোগ জানান সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত (লাঙ্গল) প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।

এ বিষয়ে আজ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মোহাম্মদ সাদিক আরও বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনের সচিব নই, আমি পিএসসি চেয়ারম্যানও নই। আমি সাবেক। বর্তমান সংসদ সদস্যের অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। তিনি দুইবারের সংসদ সদস্য। ভোটারদের সঙ্গে তার অনেকভাবে সম্পর্ক আছে। আমার কর্মীরা মাঝে মাঝে বলে, তারা সংকীর্ণ থাকে। তবে আমি তাকে (পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ) কোনো দোষারোপ করছি না।

আওয়ামী লীগের মেনিফেস্টো আমারও মেনিফেস্টো উল্লেখ করে মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সুনামগঞ্জের যেসব জায়গায় গিয়েছি, সবাই কয়েকটা ব্রিজের কথা বলেছেন। ব্রিজের জন্য কয়েকটি গ্রামের মানুষ কখনো স্থলপথে কোথাও যেতে পারেন না। এর মধ্যে ফতেপুর, পৈন্দা, ধারারগাঁও-হালয়ারঘাট উল্লেখযোগ্য। এসব ব্রিজের কথা বলার সময় তাদের চোখের পাতা ভিজে যায়। আমি নির্বাচিত হলে এগুলো করার সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। কিছু রাস্তা-ঘাট, মন্দির-মসজিদ-কবর-শ্মশানের কথা অনেকে বলেছেন।

যদি বাইপাস না থাকে তাহলে সুনামগঞ্জ শহর বাঁচবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাইপাসের কথা আমি বলেছি। শহরের ওপর দিয়ে ট্রাক চললে শহর বাঁচবে না। জরুরি শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। সুরমা সুনামগঞ্জ শহরে ঢুকে পড়ছে। কয়েক দিন পর জেলা প্রশাসকের বাসভবন, জেলা জজের বাংলো, বাজার, গ্রন্থাগার ভাঙনে বিলীন হবে। শহর না বাঁচলে সুনামগঞ্জের কিছুই বাঁচবে না। এজন্য ব্রাহ্মণগাঁও থেকে জেলখানা পর্যন্ত বাঁধ এবং ওয়াকওয়ে করা গেলে সুনামগঞ্জ বাঁচবে। একটা ইমিগ্রেশন এবং চেকপোস্টও দরকার। কারণ সীমান্ত সব সময় অবহেলিত থাকে। বৈধভাবে সীমান্ত খুলে দিতে পারলে সুনামগঞ্জ হারানো গৌরব ফিরে পাবে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ পৌরসভাকে আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে একটা মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় আনা দরকার। এরকম স্বপ্ন আমি দেখি।

অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি করুণা সিন্ধ চৌধুরী বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কালাম, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিমান কান্তি রায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল হাছান শাহীন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট স্বপন রায় সপু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কল্লোল তালুকদার চপল, সদস্য সাজ্জাদ হোসেন নাহিদ, মো. শাহারুল আলম, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শুভ বনিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ঝন্টু তালুকদার, ড. মোহাম্মদ সাদিকের মেয়ে মাসতুরা তাসনিম সুরমা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, সুনামগঞ্জে আমরা এমন একজন প্রার্থী পেয়েছি যাকে নিয়ে সারা দেশে গর্ব করতে পারব, কথা বলতে পারব। জননেত্রী শেখ হাসিনা উনাকে (মোহাম্মদ সাদিক) পছন্দ করে পাঠিয়েছেন। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। আমরা নেত্রীর প্রার্থী, স্বাধীনতার প্রার্থী ও সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তানকে বরণ করে নিয়েছি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সুনামগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সোহানুর রহমান সোহান/এমজেইউ