নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন লাঙ্গল ও নোঙ্গরের প্রার্থী
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার
সুষ্ঠু ভোটের মাঠ না থাকা এবং দলের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ এনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ও বিএনএমের (নোঙ্গর) দুই প্রার্থী।
সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনএমের প্রার্থী দেওয়ান শামছুল আবেদীন ভোটে না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) নিজ নিজ এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তারা।
বিজ্ঞাপন
আজ মঙ্গলবার সকালে জামালগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। পরবর্তীতে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাজোটের প্রার্থীর সমর্থনে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করি। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করি ও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাই। কিন্তু আমি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলেও তাদের কাছ থেকে প্রচারণায় কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। এ অবস্থায় আমি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি আসন ভাগাভাগি করেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে আজ বিকেলে নিজ বাসায় নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী দেওয়ান শামছুল আবেদীন বলেন, আমি নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর থেকেই আমার বিরুদ্ধে নানা রকমের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রথমে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। পরে নির্বাচন কমিশন, হাইকোর্ট সব জায়গা থেকে আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই জায়গায় আমি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে গিয়ে প্রার্থিতা বৈধ করে নির্বাচনে ফিরে এসেছি। কিন্তু আমার প্রথমে মনে হয়েছিল নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিন্তু বর্তমানে যা দেখছি সেখানে বলতে হচ্ছে দেশে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটাই নেই।
বিএনএমের প্রার্থী আরও বলেন, আমার সমর্থিত মানুষদের ওপর ক্ষমতাসীনরা হামলা চালিয়ে, মারধর করেছে। তাছাড়া যাদের বিরুদ্ধে অনেক পুরোনো রাজনৈতিক মামলা ছিল সেগুলো দিয়েও হয়রানি করা হচ্ছে। সেজন্য এখানে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ ছাড়া এই আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী দুই হাত ভরে টাকা বিলাচ্ছেন। যেখানেই যাচ্ছেন টাকা দিয়ে আসছেন। এটা নির্বাচনের পরিবেশ নয়। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর এবং আমি আজ থেকে কোনো প্রার্থী নয় এবং আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট প্রত্যাখান করলাম।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে আব্দুল মান্নান ছাড়াও আরও ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে রঞ্জিত চন্দ্র সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সেলিম আহমেদ, বাংলাদেশ কংগ্রেস থেকে নবাব সালেহ আহমেদ, তৃণমূল বিএনপি থেকে মো. আশরাফ আলী, গণফ্রন্টের জাহানুর রশীদ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির হারিছ মিয়া।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দেওয়ান শামছুল আবেদীনসহ মোট ৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের পরের দিনই নৌকাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এনামুল কবির ইমন। এই দুজন বাদে এখন নির্বাচনের মাঠে নৌকার প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, এনপিপির মোহাম্মদ দিলোয়ার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবারক হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সোহানুর রহমান সোহান/এমজেইউ