ঘরে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ না থাকায় উঠতে পারেননি সুবিধাভোগীরা

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আধপাকা ঘর পেয়েছেন লালপুর উপজেলার ৩৫ জন ভূমিহীন। কিন্তু এসব ঘরে বিদ্যুৎ এবং পানির সংযোগ না থাকায় তিন মাসেও ঘরে উঠতে পারেননি তারা।

উপজেলার মঞ্জিলপুকুর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে ১৩টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু দুটি ছাড়া বাকি ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা।

স্থানীয়রা জানান, যাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগেরই নিজস্ব ঘরবাড়ি রয়েছে। নতুন ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানির ব্যবস্থা না করেই খুব তড়িঘড়ি করে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়, তাই কেউ ঘরে উঠেনি।

উপহারের ঘরে বসবাস করা মমতাজ বেগম (৪৮) জানান, আমার সাথে বাকিরাও ঘর পেয়েছেন। কিন্তু পানি ও বিদ্যুৎ না থাকায় তারা কেউ এখানে আসছেন না, তারা আগের বাড়িতেই থাকছেন।

তিনি আরো বলেন, পানি ও বিদ্যুৎ ছাড়া খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। থাকার কোনো জায়গা না থাকায় অনেক কষ্টে এখানে থাকছি। একই অবস্থা উপজেলার গোধড়া, বাহাদুরপুরসহ বাকি সব আশ্রয়ণ প্রকল্পে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল গনি জানান, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সর্ব প্রথম প্রয়োজন পানি, আর এখানে সেই পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। তাই কেউ এখানে থাকছে না। এ সমস্যা সমাধানে অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না।

লালপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহাফুজুর রহমান জানান, ঘর নির্মাণ করা ছিল আমাদের দায়িত্ব, আমরা আমাদের কাজটি সম্পন্ন করে হস্তান্তর করেছি। নলকূপ দেবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা করবে পল্লী বিদ্যুৎ।

লালপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রবিন আহম্মেদ জানান, প্রকল্প এলাকায় নলকূপ স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে। শিগগির প্রকল্প এলাকায় নলকূপ স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ডিজিএম রেজাউল করিম জানান, কয়েকটি স্থানে ইতোমধ্যেই সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় সংযোগ দেওয়ার জন্য লাইনও নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সুবিধাভোগীদের ঘর ওয়ারিং না করা এবং মিটারের জন্য অর্থ জমা না দেওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারছি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানিন দ্যুতি ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরগুলোতে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল। এজন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর বিদ্যুতের জন্য উপকারভোগীদের নিজস্ব অর্থায়নে করতে হবে।

তাপস কুমার/এমএসআর