হবিগঞ্জের চারটি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। এই ভোটের যুদ্ধে নেমেছেন বিভিন্ন দলের ৩১ জন প্রার্থী। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

হবিগঞ্জ-১ এ ৫ জন, ২ আসনে ৯ জন, ৩ আসনে ৯ জন এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনে ৮ জন প্রার্থী খাতা-কলমে ভোটে নেমেছেন। তবে এদের অধিকাংশ প্রার্থীর সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাও নেই ভোটারদের। তবে হবিগঞ্জ-৩ আসন ছাড়া বাকি তিনটিতেই জমাজমাট ভোটযুদ্ধের প্রবল সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছে।  নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, স্পেশাল স্ট্রাইটিং ফোর্স, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার মাঠে রয়েছে। হবিগঞ্জ-১,২ ও ৪ আসনে নির্বাচনী লড়াই থাকলেও ৩ আসনে শক্ত প্রতিপক্ষ না থাকায় নিশ্চিত বিজয়ের পথে আওয়ামী লীগ প্রার্থী। 

জেলার মোট ৯টি উপজেলা ও ৬টি পৌরসভা রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ লাখ ১ হাজার ৬৬০ জন। পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৯ জন, মহিলা ৮ লাখ ৪২ হাজার ৩৮ জন ও হিজরা ১৩ জন। মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৬৩৫টি। এর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ৬১টি কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের তদারকি টিম মোট ৮টি, ৯টি স্পেশাল স্ট্রাইটিং ফোর্স, পুলিশ সদস্য রয়েছে ১ হাজার ৮৭৫ জন। আনসার রয়েছে ৯টি টিম। র‍্যাবের ৮টি টহল টিম মাঠে কাজ করছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৯ জন এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ২৯ জন রয়েছেন। বিজিবি আছে ১৭ প্লাটুন। তদন্ত কমিটি আছে ৪টি।
(নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে ৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে এখানে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকায় স্বতন্দ্র প্রার্থী সাবেক এমপি কেয়া চৌধুরী (ঈগল) প্রতীক নিয়ে অনেকটাই সুবিধাজনক রয়েছেন। যদিও শেষ মুহূর্তে এসে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মহাজোট সমর্থিত জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল মুনিম চৌধুরী বাবু (লাঙল) মাঠে নামায় হাডাহাড্ডি লড়াইয়ে আভাস মিলছে। এছাড়া বাকি ৩ প্রার্থী স্বতন্দ্র গাজী মোহাম্মদ শাহেদ (ট্রাক), ইসলামী ঐক্যজোটের মোস্তাক আহমেদ ফারহানী (মিনার), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নুরুল হক (গামছা) নির্বাচনী প্রচারণার মাঠেই দেখা যায়নি। 

বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ আসনে ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী শংকর পাল ( লাঙল) নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য স্বতন্দ্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ খান (ঈগল) ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন রুয়েলের (নৌকা) মধ্যে জোর লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া কাগজে-কলমে প্রার্থী রয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনমোহন দেবনাথ (গামছা), ইসলামী ঐক্যজোটের শেখ হিফজুর রহমান (মিনার), তৃণমূল বিএনপির খাইরুল আলম (সোনালী আশঁ), বিএনএমএর এসএ এম সোহাগ (নোঙ্গর), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশর মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ (চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের জিয়াউর রশিদ (ডাব)।    

সদর-লাখাই ও শায়েস্তগঞ্জ নির্বাচনে এ আসনে প্রার্থী রয়েছেন ৯ জন। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আবু জাহির (নৌকা) ছাড়া কোনো প্রার্থীকে মাঠে দেখা যায়নি। ফলে নিশ্চিত বিজয়ের পথে তিনি। এ আসনে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী এম এ মুমিন চৌধুরী বুলবুল (লাঙল), বিএনএম এর মো. বদরুল আলম সিদ্দিকী (নোঙ্গর), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের আদম আলী (ফুলের মালা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুল কাদির (আম), জাকের পার্টির আনসারুল হক (গোলাপ ফুল), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবদুল ওয়াহেদ (চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের নোমান হাসান (ডাব), মুক্তিজোটের (জেডিপি) শাহিনুর রহমান (ছড়ি) প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন।  

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনটিতে ৮ জন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী (নৌকা), স্বতন্দ্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সমুনের (ঈগল) মধ্যে হাডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। এছাড়া কাগজে-কলমে প্রার্থী রয়েছেন জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী আহাদ উদ্দিন চৌধুরী (লাঙল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আল আমিন (ডাব), ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের আবু ছালেহ (মিনার), বিএনএম এর মুখলেচুর রহমান (নোঙ্গর), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আব্দুল মুমিন (চেয়ার), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ঐকজোটের রাশেদুল ইসলাম খোকন (ছড়ি)।

আজহারুল মুরাদ/আরকে