ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান, বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশ। সব আমলের নির্বাচন নিজ চোখে দেখেছেন ১০১ বছর বয়সী গোল বাহার। জীবনের দীর্ঘ এই যাত্রায় সরকার গঠনে ভোট দিয়েছেন প্রতিবারই। কখনো ভোট বর্জন করেননি তিনি। জীবনের সোনালি সময়গুলো পেরিয়ে এখন তাকে আশ্রয় নিতে হয়েছে হুইলচেয়ারে। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হুইলচেয়ারে করেই ভোট দিতে এসেছেন শত বছর বয়সী গোল বাহার।

গোল বাহারকে ভোটকেন্দ্রে নিতে সহযোগিতা করেছেন তার ৭০ বছর বয়সী ছেলে হাবিবুর রহমান বয়াতী।

রোববার (৭ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে শরীয়তপুর-২ আসনের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের ১৬ নম্বর পালেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিনি ভোট দিতে এসেছেন। 

জানা গেছে, ১৯২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গোল বাহার নড়িয়ার মাইজপাড়া এলাকায় মকিম কোটারী ও বরনী দম্পত্তির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্বামী আলিমুদ্দীন বয়াতী ১৯৮০ সালে মারা যান। ৬ ছেলে ও ২ মেয়ের জননী গোল বাহার বার্ধক্যজনিত কারণে এখন নিজে চলাফেরা করতে পারেন না। তবে জীবনে কখনো ভোট প্রদানে বিরত থাকেননি তিনি। তাই এবারও এসেছেন ভোটকেন্দ্রে। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার বয়স অনুযায়ী ১০১ বছর হলেও তার পরিবারের দাবি তার বয়স ১১৫ বছরের বেশি।

ভোট প্রদান শেষে গোল বাহার ঢাকা পোস্টকে বলেন, জীবনে কোনো নির্বাচনের ভোট বর্জন করিনি আমি। যতদিন বেঁচে থাকব, ভোট প্রয়োগ করে দেশের সরকার গঠনে সহযোগিতা করব আমি। ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান সব আমলই দেখেছি। এবারের নির্বাচনে সবাই বলেছিল, ভোট দিতে পারব না। কিন্তু আমি সুন্দরভাবে ভোট দিয়েছি। 

গোল বাহারের ছেলে হাবিবুর রহমান বয়াতী (৭০) ঢাকা পোস্টকে বলেন, মা এখন বিছানাতেই থাকেন। প্রাকৃতিক কাজসহ খাওয়া-নাওয়া সবই করিয়ে দিতে হয় তাকে। তিনি কখনো ভোট প্রয়োগ থেকে বিরত থাকেননি। নির্বাচনের শুরু থেকেই বলে আসছিল ভোট প্রয়োগ করতে কেন্দ্রে যাবেন, তাই নিয়ে এসেছি। আপনারা আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।

কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার ও নড়িয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাম্মেল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোল বাহারকে ভোট দিতে সহযোগিতা করেছি। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৭০৫ জন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ ভোট প্রয়োগ করেছেন ভোটাররা।

সাইফ রুদাদ/এনটি