ভোট শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টায় বরিশালের ছয়টি আসনে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও কেন্দ্র কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও খুব একটা ভোটারের দেখা মেলেনি।

উজিরপুরের ইলুহার ইউনিয়নের বাসিন্দা রূপবতী মুন্সী বলেন, গত দুই বার (২০১৪-১৮) নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই। এবার ঢাকা থেকে এসেছি ভোট দিতে। তখন এলাকায় থাকলেও দিতে পারি নাই। তবে এবার ভোট দিতে পেরেছি। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম কি না কি হয়! কিন্তু এসে দেখি সুন্দর পরিবেশ। তবে আগের মতো ভোটার নাই। 

বরিশাল সদর উপজেলার পতাং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটার আশিকুল ইসলাম বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩২৭৮ জন। এর মধ্যে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩৪৯টি। আমার মনে হয় না সব ভোটার ভোট দিতে আসবে। ভোট নিয়ে মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়ায় ভোটার আসতে চাচ্ছে না।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রশীপপুরের বাসিন্দা ইব্রাহিম বলেন, আমার ভোট থাকলেও ভোট দিতে যাইনি। তবে ভোট কেমন হচ্ছে তা দেখতে এসেছি।

বরিশালের ছয়টি আসনে নির্বাচনের মাঠে মোট ৩৫ প্রার্থী রয়েছেন। যার মধ্যে বরিশাল-২ আসনে মনিরুল ইসলাম নৌকাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া, বরিশাল-২ ও ৫ আসনে জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপসও প্রহসনের নির্বাচন আখ্যা দিয়ে সরে গেছেন।

বরিশাল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুরো জেলায় নির্বাচনী নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো জেলায় ১৭ প্লাটুন বিজিবি, ১০ প্লাটুন সেনাবাহিনীর সদস্য ও সদরে একটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলায় মোট ২১ লাখ ৩২ হাজার ৭৪ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৪ জন, নারী ভোটার ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪৪ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৯ জন। যারা ৮২৭টি কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এদিকে ৪৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১৩ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন পুলিশ, আনসার, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা। যার মধ্যে প্রতি আসনে র‍্যাবের দুটি করে ১২টি টহল টিম, মেট্রোপলিটন এলাকায় বিএমপি পুলিশের এক হাজার ২৮০ জন সদস্য এবং পুলিশের দুই হাজার ১৭৩ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।

এ ছাড়া, ১০ হাজার ৯২ জন আনসার সদস্যের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে ৯ হাজার ৯২৪ জন, সেনাবাহিনীর ৬০৮ জন, বিজিবির ১৭ প্লাটুন, কোস্টগার্ডের ১৫৯ জন নিয়োজিত রয়েছেন। যার মধ্যে কোস্টগার্ড নদীবেষ্টিত হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের ১০টি ইউনিয়নে কাজ করছেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমজে