ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা ও ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগে প্রিসাইডিং অফিসারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরে তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।  

তারা হলেন- মদিনাতুল উল আলহাজ্ব আকবর হোসেন কাওমি মাদরাসা ও এতিমখানা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইলিয়াস উদ্দিন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও নৌকার এজেন্ট। তবে তাদের দুজনের নাম জানা যায়নি।

রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গফরগাঁও পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মদিনাতুল উল আলহাজ্ব আকবর হোসেন কাওমি মাদরাসা ও এতিমখানা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের উপস্থিতিতে পোলিং এজেন্ট ভোটারকে একটি নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য দেখিয়ে দিচ্ছে। এ ঘটনায় প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্টকে প্রত্যাহার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর ভোট বর্জন

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) সংসদীয় আসনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. আবুল হোসেন দীপু ও অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ রোববার সকালে কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। 

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে ১১১টি কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ আসনে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আবুল হোসেন দীপু ও অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ উল্লেখযোগ্য প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় সকাল ১০টার দিকে তারা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আবুল হোসেন দিপু বলেন, অধিকাংশ কেন্দ্র নৌকার লোকজনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।  তারা জোরপূর্বক ভোট দিচ্ছে, এখানে প্রশাসন নীরব। দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে জানানো হলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।  সুতরাং এই নির্বাচনে থাকা অর্থহীন।   

তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ, তারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। মারধর খেয়ে আহত হয়েছেন। আমি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। আজকে সুষ্ঠু পরিবেশ ও ভোট দেওয়ার পরিবেশ না থাকার কারণে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ভোট বর্জন ঘোষণা করছি। কারণ এভাবে জোরপূর্বক ভোট দিয়ে কোনো ফল আসবে না। এটি এক ধরনের প্রহসন। তাই প্রহসনের এ নির্বাচন আমি বর্জন করলাম।  

ফেসবুক লাইভে গিয়ে নির্বাচন বর্জন করেন ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়াই করা অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ। তিনি বলেন, হুমকি-ধমকি প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা ও ভোটের পরিবেশ না থাকায় বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  এক পেশে নির্বাচন, গফরগাঁয়ে কোনো নির্বাচনের পরিবেশ নেই।  এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।  নৌকায় সিল মারছে এবং সেটি উৎসব করে ফেসবুকে লাইভ করছে।  প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক ও অনিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে ও প্রশাসনের মদদে এসব ঘটানো হয়েছে। তাই ভোট বর্জন করেছি।

উবায়দুল হক/আরএআর