পাঁচ বছরে শূন্য থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া সেই সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু এবার জামানত হারালেন। রোববার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে এই তথ্য পাওয়া যায়।

রেজাউল করিম বাবলু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ (গাবতলী শাহজাহানপুর) আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রভাবে ভোটের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেন।

নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের (কাস্টিং ভোট) আট ভাগের এক ভাগ থেকে অন্তত একটি ভোট বেশি হবে। 

কিন্তু এই নির্বাচনে রেজাউল করিম বাবলু বগুড়া-৭ আসনে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৭টি। আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১২ হাজার ২৫৮। মোট প্রদত্ত ভোট ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫১টি। যার মধ্যে বৈধ ভোট গননা করা হয় ১ লাখ ৮ হাজার ৭টি। এই নির্বাচনে জামানত রক্ষার জন্য একজন প্রার্থীকে পেতে হতো ১৪ হাজার ৫৬ ভোট।   

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে কাস্টিং ভোটের ৮ শতাংশ থেকে একটি ভোট বেশি পেতে হবে। এর কম ভোট পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা আলম নান্নু ৯১ হাজার ২৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া ১১ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়েছিলেন। 

যেভাবে এমপি হয়েছিলেন রেজাউল করিম বাবলু

বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনটি ‘জিয়া পরিবারের আসন’ হিসেবে পরিচিত। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান গাবতলী ও পাশের উপজেলা শাজাহানপুর নিয়ে এ আসন গঠিত। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সব জাতীয় নির্বাচনেই এ আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি খালেদা জিয়া। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পান দলের গাবতলী উপজেলা শাখার নেতা মোরশেদ মিলটন। তখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। আসনটি বিএনপি শূন্য হয়ে যায়।

এখানে আওয়ামী লীগেরও প্রার্থী ছিল না। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। তবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বড় অংশ ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আরা খানের পক্ষে। তিনি গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজম খানের স্ত্রী এবং শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রফি নেওয়াজ খানের শাশুড়ি। এই অবস্থায় ভোটের এক দিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিমকে সমর্থন দেয় স্থানীয় বিএনপি। ফলে এক রাতের ব্যবধানে সংসদ সদস্য হন বাবলু।

আসাফ উদ দৌলা নিওন/এএএ