ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামানত খুইয়েছেন জাতীয় পার্টির সব প্রার্থী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে চার প্রার্থীর সবাই জামানত খুইয়েছেন।
তারা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের শাহানুল করিম ওরফে গরীবুল্লাহ সেলিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের দলের অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে মোবারক হোসেন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের আমজাদ হোসেন।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান আলম দলীয় সিদ্ধান্তে শেষ মুহূর্তে নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য একজন প্রার্থীকে ২০ হাজার টাকা জামানত রাখতে হয়। নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, একটি আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোটও যদি কোনো প্রার্থী না পান, তাহলে তার সেই জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছয়টি আসনে যেসব প্রার্থী মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগেরও কম ভোট পেয়েছেন, তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।
রোববার (০৭ জানুয়ারি) রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফল অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে মোট প্রদত্ত ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯১০ ভোটের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহানুল করিম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ২০৪টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগেরও কম ভোট পাওয়ায় তার জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূইয়ার। আসনটিতে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৪০টি। এর মধ্যে রেজাউল পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ৪০৮টি ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগেরও কম। ফলে বাজেয়াপ্ত হচ্ছে নির্বাচন কমিশনে রাখা তার জামানতের টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি জাতীয় পার্টি। বাকি দুইটি আসনের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোবারক হোসেন লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৭৮টি ভোট। আসনটিতে মোট ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮৭৩টি ভোট পড়ে। তবে প্রদত্ত এ ভোটের আট ভাগের এক ভাগেরও কম পাওয়ায় বাজেয়াপ্ত হচ্ছে মোবারক হোসেনের জামানত।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আমজাদ হোসেন পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৮১৭টি ভোট। আসনটিতে ২ লাখ ৯৭০টি পড়লেও এই ভোটের আট ভাগের এক ভাগও না পাওয়ায় তার জামানত বাজেয়াপ্ত করবে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবির কারণ জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব নাসির উদ্দিন বলেন, তিনটি আসনে আমাদের প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছিলেন। সারা দেশের ভোটের অবস্থা আপনারা (সাংবাদিক) দেখেছেন। কীভাবে কী হয়েছে... এটা তো বুঝতেই পারছেন।
দলের অতিরিক্ত মহাসচিবের পরাজয়ের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের আসন তো ওটা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) ছিল না। আমাদের আসন ছিল সদর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩)। আমাদের পাঠানো হয়েছে সরাইলে। আমাদের জোট থেকে পাঠানো হলেও আওয়ামী লীগের কেউ ছিল না। আমাদেরকে তিন ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। এসব মিলিয়ে এ অবস্থা আরকি।
মাজহারুল করিম অভি/কেএ