প্রতারক হাবিবুর রহমান

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় হাবিবুর রহমান (৪৭) নামে এক ভুয়া চিকিৎসককে দুই বছরের কারাদণ্ড  দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নোয়াখালী শাখাকেও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর এলাকায় ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নোয়াখালী শাখায় এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বেগমগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আল জিনাত।

প্রতারক হাবিবুর রহমান রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানার বাওনারা গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে। তিনি  নিজেকে নিউরো মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাকিব আহসান পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন।

জানা গেছে, র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর একটি চৌকস দল দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া চিকিৎসক ডা. রাকিব আহসানের ওপর নজরদারি করে আসছিল। র‍্যাব-১১ এর আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে। জানতে পারে ডাক্তার না হয়েও রাকিব আহসান নামে একজন ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকার সহকারী অধ্যাপক ও নিউরো মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা পূর্বক রোগী দেখার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বেগমগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আল জিনাত।

 ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, ভুয়া চিকিৎসক হাবিবুর রহমান নিজেকে এমবিবিএস ও নিউরো মেডিসেনের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মানিকগঞ্জের মেডিল্যাব জেনারেল হাসপাতাল, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বরগুনার কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ভোলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বরিশালের কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক ল্যাবসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতারণা করে রোগী দেখার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে একজন স্বীকৃত চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার অপরাধে তাকে মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন- ২০১০ এর ২৮(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

বেগমগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আল জিনাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। এ সময় হাবিবুর রহমান সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তার ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল সাধারণ মানুষ। এজন্য তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুয়া চিকিৎসক প্রতি শুক্রবার ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নোয়াখালী শাখায় রোগী দেখতে আসেন। প্রতারণা করে অসহায় রোগীর কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে নজরদারি করে আজ তাকে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়েছি। ভুয়া চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর র‍্যাবের মাধ্যমে তাকে বেগমগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হয় এবং সন্ধ্যায় জেলহাজতে পাঠানো হয়। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর