পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নাটোরের বড়াইগ্রামে সোনিয়া বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূকে মুখে ওড়না ঢুকিয়ে, পেছনে হাত বেঁধে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে  প্রতিবেশী ৩ গৃহবধূর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ৩ গৃহবধূ হলেন, মোছা. মমেনা বেগম (৩৫) মোছা. মেহেনাজ (৩৪) ও মোছা. কদরী বেগম।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী সোনিয়া বেগম (৩২) একই গ্রামের ফারুক মোল্লার স্ত্রী। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহলে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার‌ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় রাতেই অভিযান‌ চালিয়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটকের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শরীফ আল রাজীব।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী সোনিয়া বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী মোছা. মমেনা বেগম, মোছা. মেহেনাজ ও মোছা. কদরী বেগমের বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি সোনিয়ার বাড়ির পাশের একটি নিরপেক্ষ জায়গায় বেড়ে ওঠা লাউ গাছ কে বা কারা কেটে ফেললে অভিযুক্তরা সোনিয়া বেগমকে গাছ কেটেছে বলে দোষারোপ করে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জের ধরে অভিযুক্ত প্রতিবেশী ৩ গৃহবধূ শনিবার রাতে সোনিয়া বেগমের বাড়ি থেকে তাকে জোরপূর্বক তুলে এনে মুখে ওড়না ঢুকিয়ে (যাতে চিৎকার না করতে পারে) দিয়ে, পেছনে হাত বেঁধে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে সোনিয়ার মেয়ের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে পুকুর থেকে তাকে (সোনিয়াকে) উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগী সোনিয়ার মেয়ে জুথি খাতুন বলেন, কয়েকদিন আগেও তারা আমার মাকে মারধর করেছে। আজ রাতে মা টিউবওয়েল পানি নিতে গেলে সেখান থেকে চুলের মুঠি ধরে মারতে মারতে নিয়ে যায় তারা (অভিযুক্তরা)। এরপর মুখে ওড়না ঢুকিয়ে হাত পা-বেঁধে পুকুরে ফেলে দেয়। 

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শরীফ আল রাজীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ ছিল। সম্প্রতি সামান্য লাউ গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ভুক্তভোগী গৃহবধূ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখন তার শারীরিক অবস্থা ভালো। 

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। মামলা রেকর্ডের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

গোলাম রাব্বানী/এমএএস