নোয়াখালীর সেনবাগে দিনব্যাপী জমজমাট মাছের মেলায় ৫০ মণ মাছ ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের কানকিরহাট বাজারে এসব মাছ বিক্রি করা হয়।

জানা গেছে, পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে নোয়াখালীর সেনবাগের কানকিরহাটে দ্বিতীয়বারের মতো দিনব্যাপী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে বিক্রি শুরুর পর থেকেই বেচাকেনা বাড়তে থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা। মাছগুলো সাধারণত পদ্মা, মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরের। বিক্রেতারা তাদের থালায় সাজিয়ে বসেন বড় আকারের রুই, চিতল, কাতল, মৃগেল, কালবাউশ, গ্রাসকার্প, বোয়াল, পাবদা, শোল, গজার, তেলাপিয়া, আইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বাজারে সর্বোচ্চ ১৩ কেজি ওজনের কাতল, রুই, বোয়াল, চিতল, কার্প, আইড় মাছ ওঠে। এছাড়া পুঁটি, চিংড়ি, কৈ, চাপিলা, চাঁদা মাছ ওঠে ব্যাপক হারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ৩০ জন বিক্রেতা অংশ নেন মাছের মেলায়। বড় বড় সামুদ্রিক মাছের সঙ্গে অনেকে দেশীয় নানা প্রজাতির ছোট মাছও নিয়ে আসেন। বেচাকেনাও চলেছে ব্যাপক। প্রত্যেকটি দোকানের সামনে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।

মাছ ক্রেতা মো. আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজারে প্রচুর মাছ উঠেছে। দামাদামি করে মাছগুলো ক্রয় করা যাচ্ছে। সব মাছ তাজা তবে দাম একটু বেশি। আমাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান আছে তাই আমি অনেক মাছ কিনেছি। 

ইয়াছিন নামে আরেক ক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজার এবার ভালোই জমেছে। ভালো বেচাকেনা হয়েছে। আমাদের নোয়াখালীতে একমাত্র এখানেই মাছের মেলা হয়। এছাড়া আর কোথাও এত বিশাল করে মাছ কেনাবেচা হয় না।

ওমর ফারুক নামে মাছ বিক্রেতা বলেন, আমরা বেশি দেশীয় মাছ তুলেছি। এসব মাছে মানুষের চাহিদা ছিল বেশি। নারীরাও আমাদের কাছ থেকে মাছ ক্রয় করেছেন। অনেকেই মেলায় ঘুরতে এসেছেন। তারা বড় বড় মাছ দেখতে এসেছেন। আমরা প্রায় চার লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছি। আলহামদুলিল্লাহ বেচাকেনা অনেক ভালো ছিল। 

ওয়াদুদ মিয়া নামে আরেক মাছ বিক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ব্যবসা বেশ ভালো। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনা এবার অনেক বেশি ছিল। চট্টগ্রাম, শরীয়তপুর, ঢাকা, ফেনী থেকেও মাছ এবারের মেলায় এসেছে। পাশাপাশি প্রায় ২০ প্রজাতির বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদীর মাছও এখানে ছিল। সামুদ্রিক মাছের প্রতিও মানুষের আগ্রহ ছিল তবে দামের কারণে অনেকেই নিতে পারেনি।

মাছের মেলার আয়োজক মো. সাহাব উদ্দিন ও জাহের মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাঘ মাসের ১ তারিখ উপলক্ষ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এ মাছের মেলার আয়োজন হলো। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৫০ মণ মাছ বিক্রি হয়েছে। প্রকারভেদে এসব মাছের দাম হয়েছে ১৫ লাখ টাকা হবে। মানুষের আগ্রহ ছিল। আগামীতেও এই মেলা অব্যাহত থাকবে। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর