মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্য একটি মামলায় তাদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় দেন।  

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. মিলন শিকদার (৩৪), মো. ফয়সাল জুয়েল শেখ (২৮) ও মো. নাজির হোসেন মোড়ল।

মিলন শিকদার লৌহজং উপজেলার উত্তর মসদগাঁও গ্রামের মৃত নাজির আহমেদ শিকদারের ছেলে। মো. ফয়সাল জুয়েল শেখ একই এলাকার মিলন খানের ছেলে এবং মো.‌ নাজির হোসেন মোড়ল একই গ্রামের মৃত বাদশা মোড়লের ছেলে। আদালতের ব্রেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার‌ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি আ. বারেক শেখ তার বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টংগিবাড়ী থানা পুলিশ আ. বারেক শেখকে আহত অবস্থায় তৌলকাইগামী ব্রিজের মাঝামাঝি রাস্তার দক্ষিণ পাশ থেকে উদ্ধার করেন। 

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন আসামিরা লৌহজং উপজেলা থেকে পাশের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও বাজারে মোটরসাইকেলে করে এসে ব্যাংক এশিয়ার সামনে অবস্থান নেয়। ওই সময় আ. বারেক শেখ ব্যাংক থেকে কাঁধে একটি স্কুল ব্যাগ ঝুলিয়ে ব্যাংক থেকে বের হন। এরপর অটোরিকশায় করে টংগীবাড়ী বাজারের দিকে রওনা করেন। তখন আসামিরা মোটরসাইকেলে অটোরিকশাটিকে অনুসরণ করতে থাকে। পরে রিকশাটি টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বলই টু তোলকাই গামী ব্রিজের মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছালে রিকশা থামিয়ে বারেক শেখকে চাকু দিয়ে আঘাত করে। পরে তার কাছে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় চাকুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বারেক শেখ। 

পরে ওই ঘটনায় নিহতের বাবা মোস্তফা বাদী হয়ে টঙ্গীবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় মোট ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।

এ ব্যাপারে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কে.এম  রিয়াজুল বলেন, সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের বিভিন্ন কৌশলে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের পিপি আব্দুল মতিন বলেন, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করছে।

ব.ম শামীম/এএএ