তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন
যশোরে ফুটপাতের দোকানে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের
যশোরে জেঁকে বসেছে শীত। গত এক সপ্তাহ ধরে দেখা নেই সূর্যের। তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষজন। শীত নিবারণের জন্য তাই ভিড় করছেন শহরের ফুটপাতের পুরানো গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে।
যশোর শহরের মুজিব সড়কের (দড়াটানা- সিভিল কোর্ট) ফুটপাতে এ চিত্র দেখা গেছে। প্রতিটি দোকানে গরম পোশাক কিনতে ভিড় করছেন রিকশাচালক, দিনমজুরসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। কাপড়ের গাদা থেকে নেড়েচেড়ে সাধ্যের মধ্যে আরামদায়ক পোশাকটি বেছে নিচ্ছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
যশোর শহরের ফুটপাতে এমন পুরাতন কাপড়ের দোকানের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ২৫টি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে তাদের বেচাকেনা। প্রতিদিন ২ থেকে ৪ হাজার টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে।
মুজিব সড়কে কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেটের গেটের সামনে পুরাতন পোশাকের গাদা নিয়ে হাঁকডাক দিচ্ছেন শহিদুল ইসলাম নামে এক বিক্রেতা। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার দোকানে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫০ টাক মূল্যের পোশাক রয়েছে। ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে পোশাক কিনছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, শীত বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনাও বেড়েছে। মঙ্গলবার প্রায় চার হাজার টাকার পোশাক বিক্রি করেছি।
মোহাম্মদ জসিম নামে আরেক পোশাক বিক্রেতা বলেন, ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। আগে এই ফুটপাতে দুই-তিনজনের দোকান ছিল। বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় দোকানও বেড়েছে। আর প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকার বেচাকেনা হচ্ছে।
আজিবর রহমান নামে এক বিক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বড় মার্কেটে শীতের পোশাকের দাম অনেক। সেখানে ৮০০, হাজার টাকার নিচে পোশাক কেনা যায় না। এজন্য রিকশাচালক, ভ্যানচালক, গরিব মানুষজন আমাদের দোকান থেকে কম টাকায় পোশাক কিনে নিচ্ছেন।
মোহাম্মদ আকাশ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, এই সারিতে প্রায় ২৫টি পুরাতন কাপড়ের দোকান রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই প্রতিদিন দুই, চার হাজার টাকার বেচাকেনা হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে।
শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, আমরা গরিব মানুষ, বড় দোকানে গেলে পকেট কাটে। ফুটপাতের এই দোকানে পুরাতন সব কাপড় আমাদের কাছে নতুনের মতো। দামেও কম এজন্য এখান থেকে কেনার চেষ্টা করছি।
রিকশা থামিয়ে ফুটপাতের দোকান থেকে শীতের কাপড় বেছে নিচ্ছিলেন দিলদার হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, রিকশা চালালে শীত বেশি লাগে। এখান থেকে একটা গরম কাপড় বেছে নিলাম। মাত্র আড়াইশ টাকা দাম নিয়েছে।
সালমান শেখ নামে এক ক্রেতা বলেন, বর্তমানে বাজারে কাপড়ের যে দাম, তাতে বড় মার্কেটে ঢুকলে পকেট ফাঁকা হয়ে যাবে! কিন্তু শীত মানাবে না। তাই ফুটপাতের পোশাকই ভরসা। দাম যেমন একটু কম আবার কাজও দেয় বেশি।
এসকেডি