আবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে সূর্যের দেখা মিললেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহে এই জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ৯৭ শতাংশ।

গত একসপ্তাহ ধরে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশা ও শীতল বাতাস নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। তীব্র শীতে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের তেমন অসুবিধা না হলেও বিপাকে পড়তে হয়েছে নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল মানুষদের। শীতের মধ্যে শত কষ্ট হলেও পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন কাজের সন্ধানে। এই তীব্র শীতে কষ্ট পেতে হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষদের।

দিনাজপুর শহরের মর্ডান মোড় এলাকার বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন বলেন, গতকাল দুপুরের পর থেকে সূর্য দেখা মিলছে। আজ সকাল ৯টার আগে সূর্য ওঠায় ভালো লাগছে। সূর্য উঠলেও বাতাসের কারণে শীতটা কমেনি। 

অটোচালক নজুরুল ইসলাম বলেন, এবারের ঠান্ডাটা মারাত্মক। গত কয়েক বছরে এত শীত পড়েনি। শীত কর্মজীবী মানুষের জন্য খুব কষ্টকর। আজ সকাল থেকে সূর্য দেখা গেছে তবে আকাশ মেঘলা থাকায় সূর্যের তাপ নেই। আবার ঠান্ডা বাতাসের কারণে ঠান্ডাটা বেশি অনুভব হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, উত্তরাঞ্চলে বরাবরই শীত বেশি পড়ে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শীতের প্রকোপ অনেক বেশি। চলতি মৌসুমে একটানা কয়েক দিন সূর্যের দেখা না পাওয়ায় ভোগান্তি অনেক বেড়েছে।সাবধানতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। গরম খাবার ও গরম পানি খেতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, শীত নিবারণে জেলার ১৩ উপজেলার ১০৩টি ইউনিয়ন ও নয়টি পৌরসভার মাধ্যমে ইতোমধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জেলার চাহিদা অনুযায়ী আরও ৫০ হাজার পিস কম্বল এবং শিশুদের গরম কাপড় চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাপমাত্রা ১০ এর ওপর থাকায় আর ওয়েদার ভালো থাকায় এখনো স্কুল বন্ধ করা হয়নি।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ ভাগ।এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা । বগুড়াসহ দেশের কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় আকাশ পরিষ্কার হয়েছে তাই সূর্যের দেখা মিলছে। ধীরে ধীরে তাপমাত্র বাড়বে।

ইমরান আলী সোহাগ/আরকে