পদ্মা নদীতে তলিয়ে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা উদ্ধার অভিযানে ২৫০ টন সক্ষমতার উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ব্যর্থ হলে ভিন্ন পরিকল্পনা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান। 

তিনি বলেন, প্রত্যয়ের সঙ্গে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তমও কাজ করবে ফেরি উদ্ধারে। এই তিনটির সমন্বয়ে ফেরিটি উদ্ধার করা সম্ভব না হলে অবশ্যই অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সেটি আমাদের পরিকল্পনা করা আছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পাটুরিয়ার ৫নং ফেরিঘাটের পন্টুনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মতিউর রহমান এসব কথা বলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে সাতটি ট্রাক ও দুটি কাভার্ডভ্যানসহ মোট নয়টি যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ফেরি রজনীগন্ধা। নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৫ নম্বর ঘাটের পন্টুনের অদূরে পদ্মা নদীতে ফেরিটি নোঙর করে। গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেরির তলা দিয়ে পানি উঠতে থাকে। একপর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে নয়টি যানবাহন নিয়ে ধীরে ধীরে নদীতে ডুবে যায় ফেরিটি। এ সময় জীবন বাঁচাতে ফেরিতে থাকা যানবাহনের চালক, সহকারী ও ফেরিতে কর্মরত লোকজন নদীতে দ্রুত ঝাঁপ দেন। অনেকেই প্রচন্ড শীতের মধ্যেও জীবন বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন।

এ ঘটনায় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ছয়জনকে উদ্ধার করেন। ওই দিন মোট ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে ফেরিতে থাকা দ্বিতীয় ইঞ্জিনচালক হুমায়ুন কবির নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনার দিনই যানবাহন উদ্ধারে অভিযান শুরু করে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। রাত ৯টা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে দুটি ট্রাক উদ্ধার করতে সক্ষম হয় হামজা কর্তৃপক্ষ। এরপর প্রথম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান বন্ধ করা হয়।

আজ দুপুর ১২টার দিকে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় ৫০ টন সক্ষমতার আরেক উদ্ধাকারী জাহাজ রুস্তম। অভিযানের দ্বিতীয় দিনে বিকেল ৩টার দিকে আরেকটি ট্রাক উদ্ধার করে রুস্তম। হামজা ও রুস্তম মিলে উদ্ধার অভিযানের দুই দিনে তিনটি ট্রাক উদ্ধার করে। তবে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা উদ্ধারে হামজা ও রুস্তমের সক্ষমতা না থাকায় ২৫০ টন সক্ষমতার উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের অপেক্ষায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধার ওজন ২৫০ টন। দীর্ঘ সময় পদ্মা নদীর তলদেশে থাকায় ফেরিতে পলি মাটি পরে এর ওজন বেড়ে যাবে। তাতে প্রায় ৩৫০ টন থেকে ৪০০ টনের মতো হবে। উদ্ধারকারী জাহাজ হামজার সক্ষমতা ৫০ টন, রুস্তমেরও সক্ষমতা ৫০ টন আর প্রত্যয় নামে উদ্ধারকারী জাহারে সক্ষমতা ২৫০ টন। এই তিন জাহাজের সক্ষমতায় আমরা চেষ্টা করবো ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধার করতে। তবে কোনো কারণে ব্যর্থ হলে অবশ্যই অন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে রজনীগন্ধা ফেরিটি উদ্ধার করা হবে।  

সোহেল হোসেন/আরএআর