প্রতি বছরের মতো এবারও জানুয়ারি মাসে উত্তরের আট জেলায় জেঁকে বসেছে শীত। চলমান শৈত্যপ্রবাহ দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে। শীত মৌসুম কেটে যাওয়ার আগে আরও শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এ অবস্থায় শীতবস্ত্র না পেয়ে দরিদ্র মানুষ অনেক কষ্টে রয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের রংপুর বিভাগের প্রতিনিধিরা।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুই দিনের কুড়িগ্রাম জেলা ভ্রমণ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে শীতার্তদের মাঝে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তারা। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষদের দেওয়া হয়েছে কম্বল ও শীত নিবারণের জন্য উন্নতমানের জ্যাকেট।

ঢাকা পোস্টের রংপুর বিভাগের টিম আগে লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, গাইবান্ধা, দিনাজপুরসহ সাতটি জেলা ভ্রমণ করেছে। এ সময় জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করেন তারা। এবারের সফরে ব্যতিক্রম আয়োজন করে ঢাকা পোস্ট রংপুর বিভাগ টিম।

শীতবস্ত্র বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক ফরহাদুজ্জামান ফারুক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি এস কে দোয়েল, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি নিয়াজ আহমেদ সিপন, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি রিপন আকন্দ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি জুয়েল রানা, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি আরিফ হাসান, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি সোহাগ গাজী, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক শিপন তালুকদারসহ কুড়িগ্রামের গণমাধ্যমকর্মীরা।

শীতবস্ত্র পেয়ে খুশি তারা বানু। তিনি ঢাকা পোস্টকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘প্রতিবার হামার এ্যাত্তি (আমাদের এখানে) শীতে কাহিল থাকে মানুষ গুইলা (গুলো)। কিন্তু কাও (কেউ) খোঁজ-খবর নেয় না। তোমরা গুইলা খবর নিচ্ছেন আবার হামাক (আমাদের) কম্বল দিচ্ছেন। আল্লাহ তোমা গুইলার ভালো করবে বাবা।’

জ্যাকেট পেয়ে রহমান মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন থেকেই প্রচণ্ড শীতে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। ভোটের আগে সবাই আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু ভোটের পরে আর কেউ খবর নেয়নি। কেউ একটি কম্বল দিতে আসেনি। আপনারা যেভাবে আমাদের কাছে এসেছেন এজন্য আপনাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসফিকুল আলম হালিম ঢাকা পোস্টকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট দরিদ্র মানুষের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছে সত্যি এটি প্রশংসনীয়। এভাবে যদি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এসে শীতার্ত মানুষকে শীতবস্ত্র দিত তাহলে এই শীতে কেউ কষ্টে থাকত না। তাই তাদের মতো সমাজের বিদ্যমানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, আজ কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় শীত কষ্টে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমরসহ ১৬টি নদ-নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষজন। জানুয়ারি মাসজুড়েই তাপমাত্রা এরকম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ মাসের ২৮ তারিখের পর তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

আরকে/এমজেইউ