করোনার সংক্রমণ রোধে এক দিগন্তকারী যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন রিয়াদ আহমেদ শিথিল

মহামারি করোনাভাইরাসে নাকাল বিশ্ব। কোনভাবেই দমানো যাচ্ছে না এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। প্রতিদিনই শনাক্ত ও  মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন সংখ্যা। বাংলাদেশেও করোনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মহামারি ভাইরাস থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। 

স্বাস্থ্যবিধিতে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকেই নিয়ম ভেঙে মাস্ক ছাড়াই অফিস-আদালত, ধর্মীয়-ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করছেন। এতে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বাসা, অফিস, ধর্মীয় কিংবা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এক দিগন্তকারী যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন রিয়াদ আহমেদ শিথিল নামে এক তরুণ। যন্ত্রটির নাম দিয়েছেন covid-19 safely face Mask detector in door.

রিয়াজ আহমেদ শিথিল

 যন্ত্রটির সু্বিধা হলো- ফেস মাস্ক ছাড়া কক্ষে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। মুখে মাস্ক থাকলে একটি সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে এবং দরজা খুলে যাবে। মাস্ক না থাকলে পরার অনুরোধ করা হবে। মাস্ক থাকলে প্রবেশকারীকে স্বাগতম জানাবে যন্ত্রটি।

বর্তমান সময়ে যন্ত্রটি কার্যকর হলেও অর্থের অভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারেননি শিথিল। সরকারি বা বে-সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে করোনা মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল।

রিয়াদ আহমেদ শিথিল কুড়ি বছর বয়সী এক হাস্যোজ্জ্বল তরুণ। ক্ষুদে বিজ্ঞানী হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার জন্ম পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা নজরুল ইসলাম কম্পিউটারে অনলাইন সার্ভিস করে জীবিকা অর্জন করেন। মা শেলী খাতুন পেশায় একজন গৃহিণী। 

জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৪২তম বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয় এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী। পান্টি কলেজ থেকে অংশ নিয়ে covid-19 safely face Mask detector in door উপস্থাপন করেন। বিচারকদের বিচারে প্রথম স্থান অর্জন করে তার কলেজ। তার এই সময়োপযোগী আবিষ্কারের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে ভূয়সী প্রশংসাও পেয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে ক্ষুদে বিজ্ঞানী রিয়াদ আহমেদ শিথিল বলেন, ফেস মাস্ক ছাড়া কেউ কক্ষে প্রবেশ করতে চাইলে বাঁধা দিবে যন্ত্রটি। শুধুমাত্র মাস্ক থাকলে প্রবেশ করা যাবে। মাস্ক থাকলে একটি সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে এবং দরজা খুলে যাবে। মাস্ক না থাকলে মাস্ক পড়ার অনুরোধ করা হবে। মাস্ক থাকলে প্রবেশকারীকে স্বাগতম জানানো হবে।

তিনি আরও বলেন, টাকার অভাবে আমার সফলতাগুলো ঝরে পড়ছে। সরকারি বা বে-সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নতুন কিছু উপহার দিতে চাই দেশবাসীকে।

শিথিলের মা শেলী খাতুন বলেন, খুব ছোট থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে চিন্তা ভাবনা ওর। কিন্তু গরিব হওয়ায় সামনে অগ্রসর হতে পারিনি। কারো সহযোগিতা পেলে ভাল কিছু করবে শিথিল।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের বিজ্ঞান মেলাতে উপজেলায় প্রথম ও জেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় হন শিথিল। সঠিক দিকনির্দেশনা আর অর্থাভাবে জাতীয় পার্যয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনি তিনি। 

রাজু আহমেদ/এসপি