রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের ৭২ বছর বয়সী আকিরন নেছা দীর্ঘদিন ধরেই বয়স্ক ভাতার সুবিধা পাচ্ছিলেন। একদিন হঠাৎ অজানা কারণে ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে তার বয়স্ক ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি মারা গেছেন। বাস্তবে তিনি বেঁচে থাকলেও সরকারি নথিপত্রে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। আকিরন নেছা পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মৃত আহাম্মদের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করছেন।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আকিরন নেছা তার ছেলের বউকে সঙ্গে নিয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আমি আকিরন নেসা দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বয়স্ক ভাতার সুবিধা পেয়ে আসছিলাম। ২০২২ সালর ২২ ডিসেম্বর থেকে আমার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে খবর নিয়ে জানতে পারি যে আমাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।সেই সঙ্গে আমার ভাতা প্রাপ্তির স্থলে অন্য কাউকে প্রতিস্থাপন করে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমি একজন জীবিত বয়স্ক মহিলা হওয়া সত্ত্বেও কি কারণে আমাকে মৃত ঘোষণা করা হলো বিষয়টি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমার ভাতা পুনরায় আমাকে ফিরিয়ে দেবেন। 

কলিমহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিলকিস বানু বলেন, আমি চেয়ারম্যান, আমার অনেক কাগজে স্বাক্ষর দিতে হয়। মৃত সনদের ক্ষেত্রে সাধারণত মেম্বার দিয়েই তদন্ত করা হয়। তবে এই মৃত সনদের ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে। আমার ইউনিয়নের মেম্বার আনোয়ার হোসেন কালু এই কাজটি করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে আমি মেম্বারকে ডেকেছিলাম। তিনি তার ভুল শিকার করে ঠিক করে দিতে চেয়েছেন। 

পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা কেটে অন্য একজনকে দেওয়া হয়েছে এমন একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বলেছি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে। তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেলে যার নাম বাদ পড়েছে তার নামে বয়স্ক ভাতায় পুনর্বহাল করা হবে। সেই সঙ্গে এই কাজে যদি কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমএএস