পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর তোড়িয়া ইউনিয়নের দাড়খোর সীমান্ত এলাকার নাগর নদী থেকে মৃত একটি বাঘ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাঘটি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঘটি ভারত থেকে দাড়খোড় সীমান্ত দিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ওই সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় এক কৃষকের গরুর গলায় আহত করে গরুটিকে অর্ধেক খেয়ে ফেলে পালিয়ে যায়। গরুর মালিক শিয়ালের আক্রমণে গরুর মৃত্যু হয়েছে মনে করে বিষ প্রয়োগ করেন। পরে বাঘটি আবার গরুটিকে খেতে আসে। খাওয়া শেষে দাড়খোড় এলাকার ঈদগাহের পাশে সীমান্তঘেঁষা নাগর নদীতে বাঘটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।

তবে ফেসবুকে ভাইরাল একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নাগর নদীর তীরেই নিজেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে বাঘটি। কিন্তু স্থানীয়রা জালে ফেলে মারধর করছে। এ কারণেও মারা যেতে পারে বাঘটি।

বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী ও পর্যবেক্ষক ফিরোজ আল সাবাহ বলেন, প্রাণী নিধন অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে এ রকম। অনেক সময় বণ্যপ্রাণীরা খাবার সংকটের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে লোকালয়ে চলে আসলে স্থানীয়দের দ্বারা মারধরের শিকার হয়। মারাও যায়। এ বাঘটির ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এভাবে প্রাণীদের না মেরে আটক করে বন বিভাগে হস্তান্তর করা উচিত।

আটোয়ারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সোয়েল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ উপজেলার তোড়িয়া দাড়খোড় সীমান্ত এলাকার নাগর নদীতে রাতের বেলায় ভারত থেকে একটি বাঘ বাংলাদেশে এসেছিল। এটা নদীর মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিল। সকালে ওই এলাকার লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিজিবিসহ গ্রামবাসীর সহায়তায় বাঘটি উদ্ধার করলে দেখা যায় মারা গেছে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ পুলিশ বাঘটি উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে আসে। মৃত বাঘটির ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মধু সুধন বর্মন বলেন, দুপুরে আটোয়ারী উপজেলার দাড়খোড় সীমান্ত এলাকায় মৃত অবস্থায় বাঘটি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। কীভাবে মারা গেছে বাঘটি তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।

এসকে দোয়েল/আরএআর