দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন মো. জাহাঙ্গীর আলম মানিকসহ চার নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা যায়, সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চৌমুহনীর মোরশেদ কমপ্লেক্সে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিককে অব্যাহতি দিয়ে তার স্থলে আওয়ামী লীগ নেতা বাহার উল্যা বাহারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আহাদকে অব্যাহতি দিয়ে তার পদে রেজাউল হক চৌধুরী, অর্জুনতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাহাব উল্যাকে অব্যাহতি দিয়ে তার স্থলে কুতুব উদ্দিন পাটোয়ারী এবং মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসানকে অব্যাহতি দিয়ে তার পদে আবদুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ও সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলম মানিকসহ অভিযুক্ত নেতারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাদের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমার একক সিদ্ধান্ত নয়। এটি সবার সর্ব সম্মতিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত। 

এদিকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা অভিযোগ করে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট করায় তিনি (মোরশেদ আলম) দলীয় সভা ডেকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। 

দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অব্যাহতি পাওয়া সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গঠনতন্ত্র পরিপন্থি বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত নির্বাচনের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। পরে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূইয়া মানিককে সমর্থক করি। সেই ক্ষোভ থেকে মোরশেদ আলম একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালী-২ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুইয়া মানিক। নৌকা প্রতীক নিয়ে মোরশেদ আলম টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করেন।

হাসিব আল আমিন/এসএম