হবিগঞ্জে বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা ব্রিজের ওপরে ট্রাক থেকে শিশুকন্যা এনিকে নদীতে ছুঁড়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বাবা ইমরান আহমেদ (৩০)। ঘাতক ইমরান সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাট উত্তরপাড়ের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।  

সোমবার বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমু সরকার ১৬৪ ধারায় ট্রাকচালক ইমরান আহমেদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত অপর আসামি ট্রাকের হেলপার একই এলাকার বাদল মিয়া (২২) পলাতক রয়েছেন।

গত ৩০ জানুয়ারি বানিয়াচং উপজেলায় শুটকি নদীর শাখায় কাগাপাশা ব্রিজের নিচে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেওয়ারিশ হিসেবে শিশুটিকে দাফন করা হয়। মরদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে মা ইয়াসমিন আক্তার দেড় বছর বয়সী এনিকে শনাক্ত করে। ইয়াসমিন আক্তার সাবেক স্বামী ইমরানসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।

বানিয়াচং থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেইন জানান, সুনামগঞ্জের দুয়ারা বাজারে অভিযান চালিয়ে ঘাতক ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ইমরান চারটি বিয়ে করেছে এবং ইয়াসমিন ও ইমরানের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের ঘরে দেড় বছরের শিশু কন্যা এনি।

তিনি আরও জানান, ইয়াসমিন আক্তার ও ইমরান মিয়ার সালিশে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। শিশু এনির জন্য ইমরান প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সালিশে। কয়েক মাস ধরে ইমরান টাকা না দেওয়ায় ইয়াসমিন তার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। পরে চিকিৎসা করানোর কথা বলে গত ২৯ জানুয়ারি রাতে মেয়ে এনিকে ট্রাকে করে নিয়ে আসেন ইমরান। সিলেট থেকে ট্রাকটি বানিয়াচংয়ের কাগাপাশা ব্রিজে উঠলে মেয়ে এনিকে ছুড়ে পানিতে ফেলে দেন তিনি। এরপর ইমরান তার সহযোগী বাদল মিয়াকে নিয়ে পালিয়ে যান। বিকালেই ইমরানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক ট্রাক সহযোগীকে ধরতে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

আরকে