ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কলোনীপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের লিচুগাছে ধরেছে আম

একটি লিচুগাছে ১৭টি লিচুর সঙ্গে ধরেছে একটি আম। যা এখন তুমুল আলোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ঠাকুরগাঁও সদরের ব্যতিক্রমী এ ঘটনায় এলাকায় যেমন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি সাধারণ মানুষের মনেও প্রশ্ন জেগেছে, আদৌ এমন হওয়া সম্ভব কি?

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষকদের কাছে এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে ঢাকা পোস্ট। গবেষকরা বলছেন, ব্যাপারটি খুবই অস্বাভাবিক। বৈজ্ঞানিকভাবে যার কোনো ব্যাখ্যা নেই।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.বি.এম আরিফ হাসান খান রবিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আম ও লিচু একই বর্গের (sapindales order) অন্তর্ভুক্ত দুটি ফল হলেও এদের পরিবার ও ক্রোমোজম সংখ্যা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমের ডিপ্লয়েড ক্রোমোজম সংখ্যা ৪০ এবং লিচুর ক্রোমোজম সংখ্যা ২৮ অথবা ৩০ অথবা ৩২ পর্যন্ত হয়ে থাকে। ক্রোমোজম সংখ্যা যদি এক হতো তাহলে অনেক সময় এমনটা ঘটতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে লিচুগাছের লিচুর থোকায় আম ধরার বিষয়টা খুবই অস্বাভাবিক। এর আগে কখনো এমনটি শোনা যায়নি।

এ ব্যাপারে একই রকম মন্তব্য করেছেন ওই বিভাগের আরেক অধ্যাপক ড. জি.এইচ.এম সাগর। তিনি বলেন, লিচুগাছে আম ধরার ব্যাপারে উদ্ভিদতত্ত্বের কোনো ব্যাখ্যা নেই। এমনটি ঘটার কথাও না। তবে আম ও লিচুর ফুল প্রায় একই সময়ে আসে এবং দুটি ফুলই অনেকটা একই রকম। আমের পরাগ রেণুর মাধ্যমে লিচুর ফুল কোনো বাহক দ্বারা অপনিষিক্ত হওয়া, পরবর্তীতে আপোমিক্সিস (Apomixis) প্রক্রিয়ায় আমের পরাগ রেণুর কোষ থেকে লিচুর থোকায় আমে পরিণত হওয়ার মতো অস্বাভাবিক ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।

তবে এমন সম্ভবনাটা ক্ষীণ। যদি ঘটনাটি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে বলা যায় প্রাকৃতিক পরাগায়ন বা পরপরাগায়নের মাধ্যমে এমনটি ঘটেছে, উল্লেখ করেন এই গবেষক।

আমটি ছিঁড়ে ফেলে যান দুই তরুণ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কোলনীপাড়ার আব্দুর রহমানের বাড়ির লিচুগাছে একটি আম ধরেছে। সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে লিচুগাছে আম দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুর রহমানের বাড়ির আঙিনায় একটি লিচু গাছে ধরেছে আম। লিচু গাছের ডালে ১৭টি লিচুর সঙ্গে আমটি ঝুলছে।

তবে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে লিচুগাছে ধরা সেই আমটি ছিঁড়ে নিয়ে যান দুই তরুণ। কিন্তু কারা সেই দুই তরুণ, কেউ বলতে পারছেন না। গাছের মালিকের দাবি, স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গেই এসেছিলেন তারা।

আবদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে স্থানীয় সফিকুল ইসলাম সিকিম মেম্বারের ভাতিজা সোহেল রানা আসে আমটি দেখতে। সে বাসায় যাওয়ার পথে একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে তর্কাতর্কি হলে বিষয়টি সে তার চাচা সিকিম মেম্বারকে অবগত করলে মেম্বার আমার বাসার এখানে আসে। মেম্বারের সঙ্গে তিনজন ছেলেও আসে।

তিনি বলেন, এরপর মেম্বারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আমার। এর মাঝেই তিনজনের মধ্যে একজন গাছ থেকে আমটি ছিঁড়ে ফেলে। আরেকজন বাইকে বসা ছিলেন। পরে আমটি নিয়ে চলে যান তারা।

এএম