সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্ত্রী মুক্তি খাতুনকে (১৯) হত্যার ১৬ বছর পর মো. মাসুদ (৪১) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। বিয়েতে যৌতুকের বাকি থাকা ১৭ হাজার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করে মাসুদ।

দণ্ডপ্রাপ্ত মাসুদ তাড়াশ থানার আড়ংগাইল গ্রামের সুরুত আলীর ছেলে। নিহত মুক্তি একই উপজেলার শোলাপাড়া গ্রামের মোকসেদ আলী খানের মেয়ে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মো. মুক্তার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামি এই মামলায় জামিনে ছিলেন। আজ রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত হন। আসামির উপস্থিতিতে আদালত রায় দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের ২৭ আগস্ট এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। মাসুদের সঙ্গে ঘটনার ৫ মাস আগে মুক্তি খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়ার কথা থাকলেও মুক্তির পরিবার বিয়ের সময় ১৩ হাজার টাকা পরিশোধ করেন এবং বাকি ১৭ হাজার টাকার জন্য দুই মাসের সময় নেন। নির্ধারিত সময়ে যৌতুকের বাকি টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মাসুদ স্ত্রীকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ তার ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। 

এ ঘটনায় নিহত মুক্তির বাবা মোকসেদ আলী খান বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট তাড়াশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত করে মামলাটির চার্জশিট দেয় পুলিশ। 

পরবর্তীতে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য দ্বারা আসামির বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগটি সন্দোহীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ বছর পর আজ রায় দেন আদালত। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর