ফেনীর পরশুরামে হাত-পা ও মুখ বেঁধে উম্মে সালমা লামিয়াকে (৭) হত্যার ঘটনায় তার মা আয়েশা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

পরশুরাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ ঘটনায় নিহত শিশু লামিয়ার বাবা মো. নূর নবী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে পরশুরাম থানায় মামলা করেন। ওইদিন রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের মা আয়েশা আক্তার ও সৎ মা রেহানা আক্তারকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ সকালে আয়েশাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সৎ মা রেহানাকে বাদীর জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

নিহত লামিয়ার বাবা নূর নবী বলেন, বিচ্ছেদের পরেও আমার আগের স্ত্রী আয়েশার সাথে বিরোধ চলে আসছিল। আমাকে ও আমার বর্তমান স্ত্রীকে ফাঁসাতেই আয়েশা এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছে।

ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, শিশু লামিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে লামিয়ার মা ও সৎ মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে নূর নবীর প্রথম স্ত্রী নিহত লামিয়ার মা আয়েশা আক্তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে। তবে হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই যুবককে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে সৎ মা রেহানার জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ফেনী জেনারেল হাসপাতালে লামিয়ার ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পরশুরামের বাঁশপদুয়া গ্রামে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। 

এর আগে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে হেলমেট পরা দুই যুবক পরশুরাম পৌরসভার পশ্চিম বাঁশপদুয়া এলাকার এয়ার আহাম্মদের ভাড়া বাসায় এসে নিজেদের পল্লী বিদ্যুতের লোক দাবি করে দরজা খুলতে বলে। শিশুরা দরজা খুলে দিলে তারা ঘরের ভেতরে ঢুকে লামিয়াকে (৭) স্কচটেপ দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যা করে। এ সময় বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহা (১২) পালিয়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। 

তারেক চৌধুরী/আরএআর