খুলনার পাইকগাছায় গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে চোখে আঠা ও মুখে টেপ লাগিয়ে এক গৃহবধূকে (৪৫) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।

জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী গ্রামে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভুক্তভোগী নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে কয়েকজন লোক মই দিয়ে ওই বাড়ির ছাদে ওঠে। তারপর সিঁড়ির দরজা ভেঙে গৃহবধূর কক্ষে প্রবেশ করে। স্বামী ব্যবসার কাজে বাইরে থাকায় তখন বাড়িতে একা ছিলেন গৃহবধূ। দুর্বৃত্তরা তার হাত-পা বেঁধে, চোখে সুপার গ্লু বা এ ধরনের কোনো আঠা এবং মুখে টেপ লাগিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর আঘাত করে, কান থেকে স্বর্ণের দুল ছিঁড়ে নিয়ে যায়।

ভোরের দিকে গৃহবধূর গোঙানি শুনে আশপাশের লোকজন এসে তার স্বামীকে খবর দেন। এরপর তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

পাইকগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।

গৃহবধূর স্বামী বলেন, বিকেল ৩টার দিকে ব্যবসায়ীক কাজে গড়ইখালী বাজারে যাই। প্রতিবেশীরা ভোর রাত ৫টার দিকে আমাকে ফোন করে ঘটনা জানান।

তিনি বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একাধিক ব্যক্তি আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। সেখানে আমার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতি করে তারা। তার চোখে আঠা দেওয়া ছিল এবং কান ছেঁড়া ছিল। আমার স্ত্রী কথা বলতে পারছে না। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার কনক হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী নারী যখন আসেন তার দুই চোখ আঠা দিয়ে লাগানো ছিল। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তাকে গাইনি বিভাগে পাঠিয়েছি। এছাড়া চক্ষু বিভাগে তার চিকিৎসা করানো হয়েছে। বর্তমানে রোগীর জ্ঞান ফিরেছে। এখনও তিনি সুস্থ নন। আশা করছি, চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি স্বাভাবিক হতে পারবেন। 

মোহাম্মদ মিলন/আরকে