ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার মুখী পল্লীসেবক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থী শিক্ষকদের ভুলে প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। তবে ভুলের দায় নিয়ে যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ২২ পরীক্ষার্থী ফরম পূরণে ভুল করে। পরে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই পরীক্ষার্থীরা জানতে পারে তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। এরপর পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপে প্রবেশপত্র আসবে বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের শান্ত করে। তবে শেষ পর্যন্ত ২২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জন প্রবেশপত্র পেয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়। বাকি ১৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

এমন পরিস্থিতিতে ওই ১৪ জন পরীক্ষার্থী বুধবার গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রবেশপত্র না পাওয়া শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে তাদের রেজিস্ট্রেশন ফি ও পরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণের টাকা পরিশোধ করেছে। সে সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ফরম ফিলাপ হয়েছে বলে তাদের অবগত করে। কিন্তু বুধবার বিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারে তাদের নিবন্ধনই হয়নি। ফলে তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। 

শিক্ষার্থীরা বলে, আমাদের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। নির্ধারিত ফি নিয়ে এখন বলছে রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তাহলে প্রবেশপত্র আসবে কোথা থেকে। তাদের প্রতারণার কারণে আমাদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে তা মেনে নিতে পারছি না।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের আইসিটির শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, ১৪ শিক্ষার্থীর অংশ না নেওয়ার মূল কারণ আমাদের ভুল। আমাদের ভুলের কারণে তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। আমরা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। অনেক অভিভাবক আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। যেহেতু ভুল করেছি, যে কোনো শাস্তি মেনে নেব।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান নিজেদের ভুল স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক মো. রেজাউল খুবই দক্ষ। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে এমন ভুল কীভাবে করলেন বুঝতে পারছি না। ওই ১৪ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় তারা আর পরীক্ষা দিতে পারবে না। বাকি ৮ জনের ছবি ও গ্রুপের ভুল ছিল তা সমাধান হয়ে গেছে। তারা প্রবেশপত্র পেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বাকি ১৪ পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন না হওয়ার পরও ফরম ফিলাপের জন্য কেন টাকা নেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উবায়দুল হক/আরএআর