জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে শামিয়ানার নিচে।

কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, এই কেন্দ্রে চারটি বিদ্যালয়ের ৭০৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এর মধ্যে কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২০ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এদিকে নিজ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম না থাকায় কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশেই কলাবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্র করা হয়েছে। কিন্তু সেই কেন্দ্রে আসন সংকট থাকায় মাঠের একপাশে শামিয়ানা টানিয়ে তার নিচে ৫৫ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, পরীক্ষাকেন্দ্রের চারপাশে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিদ্যালয়ের মাঠের ঢুকতেই দেখা যায়, মাঠের একপাশে শামিয়ানা করা হয়েছে। শামিয়ানার মধ্যে আবার তিনটি কক্ষ করা হয়েছে।

এদিকে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে এলে সাংবাদিকদের দুরমুট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিলাশ সরকার বলেন, আমি এই পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব রয়েছি। কী জন্য এসেছেন, কী সমস্যা? এটা নিয়ে কোনো নিউজ করা যাবে না।

ইউপি সদস্য হিসেবে কীভাবে এ দায়িত্ব পেয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল হয় কি না এটা বাইরে থেকে আমি দেখাশোনা করি।

কথা বলার মধ্যেই তিনি ফোন করে তার কয়েকজন অনুসারীকে ডেকে আনেন।

শামিয়ানার মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাঠের ভেতরে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এই কেন্দ্রের পাশে একটু দূরে কলাবাধা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ছিল, সেটাই পরীক্ষাকেন্দ্র করতে পারত। কিন্তু সেটা না করে একই কেন্দ্রের পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছে। হঠাৎ যদি পরীক্ষা চলাকালীন বৃষ্টি আসে তাহলে কী হবে। এভাবে পরীক্ষা নেওয়াটা কখনোই ঠিক না।

এ বিষয়ে কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব মো. মুনায়েম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কলাবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেন্যুতে পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসন সংকট থাকায় শামিয়ানা করা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি একটি আবেদন দিতে বলেছেন। আমরা আজকেই আবেদন করবো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। আর শামিয়ানার বিষয়টি আমি জানি না, আপনাদের (সাংবাদিক) কাছ থেকে বিষয়টি মাত্র শুনলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদেরকে না জানিয়ে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রয়েছে, সেখানে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছি।

রকিব হাসান নয়ন/এমজেইউ