দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি এক যুগের বেশি সময় ধরে অচল অবস্থায় পরে আছে। মেশিনটি অচল অবস্থায় পড়ে থাকায় লাভবান হচ্ছে স্থানীয় ক্লিনিক মালিকরা। এদিকে অলস সময় পার করছেন হাসপাতলের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চিরিরবন্দর উপজেলায় হাসপাতালটি স্থাপনের পর পরই এতে একটি এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয়। এক্স-রে মেশিন আসলেও দীর্ঘ দিন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকায় চালু করা সম্ভব হয়নি। ২০০৬ বা ২০০৭ সালের দিকে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের নিয়োগ হলেও কিছুদিন রোগীদের এক্স-রে সেবা দেওয়ার পরই অচল হয়ে পড়েন এক্স-রে মেশিনটি। এর কিছুদিন পরে টেকনোলজিস্টকে দিনাজপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারপর থেকে এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে আছে। সর্বশেষ গত ৬ মাস আগে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জয়েন্ট করলেও এক্স-রে মেশিনটি আর সচল না হওয়ায় অলস সময় পার করছেন তিনি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে নীল কান্ত রায় বলেন, চিরিরবন্দর সরকারি হাসপাতলে গেছিলাম বুকের এক্স-রে করতে হাসপাতালে মেশিনটা নষ্ট ডাক্তার কাগজ ধরে দিয়ে বলে বাইরের ক্লিনিক থেকে রিপোর্ট করে আনতে। বাইরে ক্লিনিক থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে করলাম। তাহলে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে কি লাভ? যদি মেশিন ঠিক না থাকে।

হাতের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মরিয়ম নেছা বলেন, সরকারি হাসপাতালে গেছিলাম হাতের ব্যথা নিয়ে। ডাক্তার বলে পরীক্ষা করতে। কিন্তু ডাক্তার কয় হাসপাতালের মেশিন নষ্ট বাইরে ক্লিনিক যায় পরীক্ষা করাতে। কয়েক মাস আগে আরেক বার হাতে হাতের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আইছিলাম তখনো শুনছিলাম মেশিন নষ্ট।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফিক) নাজিবুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ৬ মাস আগে এখানে জয়েন্ট করেছি। আমি জয়েন্ট করার আরও কয়েক বছর আগে থেকে এক্স-রে মেশিনটি অচল অবস্থায় পরে আছে। আমি এসে প্রাথমিকভাবে ঠিক করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে পরে থাকায় এটি সচল করা সম্ভব হয়নি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উপ-সরকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. ভিসি পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকায় এক্স-রে মেশিনটি অচল হয়ে পরে আছে। হাসপাতালের ইনডোর আউটডোর মিলে গড়ে প্রায় প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন রোগীর এক্স-রে করার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় ইমার্জেন্সি কেসেও এক্স-রে করা সম্ভব হয় না। বাইরে ক্লিনিক থেকে রোগীদের এক্স-রে করে রিপোর্ট আনতে বলা হয়।

চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভির হাসনাত রবিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি ১০ থেকে ১২ বছরের মতো অচল অবস্থায় পড়ে আছে। আমি জয়েন্ট করার পরে এক্সরে মেশিনটি সচল করার জন্য স্বাস্থ্য  মন্ত্রণালয়ের (নিমিউ অ্যান্ড টিসিতে) চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসের গত ৭ তারিখ মন্ত্র থেকে চিঠি পেয়েছি এক্সরে মেশিনটি মেরামতের জন্য কিন্তু ১৬ তারিখ পর্যন্ত কেউ আসেনি।

ইমরান আলী সোহাগ/আরকে