উপজেলা প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলীদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তা খুঁড়ে খুঁড়ে চলমান উন্নয়ন কাজের মান পরীক্ষা করছেন কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম। নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে ঘুরে সকল উন্নয়ন কাজ যাচাই করছেন নতুন এই সংসদ সদস্য। তার এসব কর্মকাণ্ডে এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে যান সংসদ সদস্য শামীম। নির্বাচনের আগে জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য সকল ব্যস্ততা উপেক্ষা করে এসব কাজ পরিদর্শন করেন সংসদ সদস্য শামীম।

এদিন সকালে উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের খলারপাড় সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ, আদ্রা ইউনিয়নের সোনাইমুড়ী সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ, উপজেলার শৈলখালী-নরিন্দ্রপুর সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ, ভাউকসার ইউনিয়নের ভাউকসার-তুলাগাঁও সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করতে দেখা যায় সংসদ সদস্য শামীমকে।

পরিদর্শনকালে নির্মাণ কাজের মান যাচাই-বাছাই করতে প্রতিটি সড়ক খুঁড়ে খুঁড়ে কার্পেটিংয়ের গভীরতা যাচাই করতে গেছে তাকে। একইসঙ্গে সেসব সড়কে নির্মাণসামগ্রীর মান পরীক্ষাসহ সড়কে ইটের সলিং, পিচ ঢালাইয়ের পরিমাণ ও পরীক্ষা করেন সংসদ সদস্য শামীম। কিছু কিছু এলাকায় চালুনি দিয়ে চেলে চেলে ঢালাই মিক্সিংয়ে উপাদানের সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ও করেন তিনি।

এসময় যেসব স্থানে তারতম্য পেয়েছেন সাথে সাথে তা নতুন করে প্রকৌশলীদের মাধ্যমে ঠিক করার জন্য নির্দেশ দেন সংসদ সদস্য শামীম। শুধু সড়কের কাজই নয়, পরিদর্শন করেছে সড়কের পাশে খালে নির্মিত ঘাট ওয়াল, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনার নির্মাণ কাজ। তার এসব কর্মকাণ্ডে বরুড়া এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা তার এসব কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন।

স্কুলশিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান খোকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমপি মহোদয় যেভাবে কাজ শুরু করেছেন বাংলাদেশের আর কোনো এমপিকে এভাবে কাজ করতে দেখিনি। আমাদের বিশ্বাস ছিল তিনি এমপি নির্বাচিত হলে বরুড়াকে একটি ব্যতিক্রম উপজেলা হিসেবে গড়বেন। অবশেষে আমাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন হচ্ছে। তিনি ঘুরে ঘুরে উপজেলার প্রতিটি উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করছেন। এতে করে দায়সারা কাজ কমে গিয়ে সঠিক কাজটি হবে। দুর্নীতি কমে আসবে। ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়াররা এখন আতঙ্কে থাকবেন। ফলে প্রতিটি কাজের মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

রাকিবুল হাসান লিমন নামের এক ইউপি চেয়ারম্যান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমপি মহোদয় নিজে হেঁটে হেঁটে কাজগুলো পরিদর্শনের ফলে সঠিকভাবে কাজগুলো হবে। এখন আর কোনো ঠিকাদার ফাঁকি দিয়ে কাজ করতে পারবেন না। আমরা এমপি মহোদয়ের এই কাজকে সাধুবাদ জানাই।

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য এজেডএম শফিউদ্দিন শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সারাদেশে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে চমৎকার উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সঠিক তদারকির ফলে সঠিকভাবে কাজগুলো করা হয় না। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে কাজগুলো যাচাই বাছাই করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই কাজের মান যাচাই করছি। এছাড়াও আমি নির্বাচনের আগে জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়ন করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমার এই কাজ আগামী ৫ বছর অব্যাহত থাকবে।

এসময় বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এএনএম মঈনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নু এমং মারমা মং, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মঈন উদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেনসহ সকল উপসহকারী প্রকৌশলীরা এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরিফ আজগর/এমএএস