ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় নিজের এক পা হারিয়ে ফেলেন শরিফুল। এরপর এক পায়ের ওপর ভর করেই জীবনের পথচলা শুরু করেন। বহু প্রতিবন্ধকতা আসলেও দমে যাননি তিনি। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তার ইচ্ছে পড়াশোনা শেষ করে সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাবি ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে লাঠিতে ভর দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন শরিফুল ইসলাম। পরে বেরোবি প্রশাসনের গাড়িতে করে তাকে পরীক্ষা হলে নিয়ে যাওয়া হয়।

শরিফুল ইসলামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানায়। তিনি বলেন, ২০১২ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকতে দেয়ালে চাপা পরে পা ক্ষত হয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসা নিতে বিলম্ব হওয়ায় পায়ে পচন ধরে এবং সেবছরই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক পা কেটে ফেলতে হয়। এরপর পিতামাতার সাহায্যে কিছুদিন চলাফেরা করার পর লাঠিতে ভর দিয়ে একপায়ে চলাচল করি। এভাবে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে নেই।

তিনি বলেন, পা হারালেও কারো বোঝা হতে চাই না। এজন্য কষ্ট হলেও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। পড়াশোনা শেষ করে ভালো সরকারি চাকরি করে পরিবারের হাল ধরব।

পা না থাকায় খারাপ লাগার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই, ভাগ্যকে মেনে নিয়েছি। এর আগে কৃত্রিম পায়ের জন্য বাবা মা চেষ্টা করেছিল। তবে, এতে অনেক টাকা প্রয়োজন হওয়ায় কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলে কৃত্রিম পা লাগানোর চেষ্টা করব। দুই পায়ে হাঁটতে পারলে আর খারাপ লাগবে না।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ২ হাজার ৯৩৪টি আসনের বিপরীতে আবেদন করে ১ লাখ ২২ হাজার ২৭৯ জন। প্রতিটি আসনের জন্য ৪২ জন শিক্ষার্থী লড়াই করছেন। এ বছর ঢাকার মধ্যে ৬৬ কেন্দ্রের পাশাপাশি বিভাগীয় শহরগুলোসহ মোট ৮০টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিপন তালুকদার/এএএ