শামীম বস্ত্র বিতান নামের একটি কাপড়ের দোকান পরিচালনা করেন মো. শামীম উদ্দিন (৩০)। দোকানে বসেই মালামাল কিনতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করেন তিনি। কৌশলে তাদের নামে সিম রেজিস্ট্রেশন করেন শামীম। এরপর সেই সিম দিয়ে বিভিন্ন নামে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলেন তিনি। তারপর দেশের বিভিন্ন জেলার বিকাশ প্রতারক চক্রের সঙ্গে সমন্বয় করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করতেন শামীম।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে শামীমসহ বিকাশ প্রতারক চক্রের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। নগদ ৬ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা, ৯টি মোবাইল হ্যান্ডসেট, ৭টি মোবাইল হ্যান্ডসেট বক্স, ৫টি এনআইডি কার্ড, ৪৪টা খালি সিমের প্যাকেট ও ২৫টি একটিভ সিমকার্ড জব্দ করা হয়। বিকেলে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয় । 

মো. শামীম উদ্দিন নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। অপর প্রতারক মো. আলী হাসান লিটন (৩৮) কুড়িগ্রাম জেলার কাজলদাহ গ্রামের মৃত গাদু মুন্সির ছেলে।

পুলিশ জানায়, শামীম উদ্দিন পেশাদার প্রতারক চক্রের শীর্ষ পর্যায়ের সদস্য। সে শামীম বস্ত্র বিতান নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিকাশসহ বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। উক্ত ব্যবসা পরিচালনাকালে আসামি দীর্ঘদিন যাবৎ কৌশলে তার অপরিচিত বিভিন্ন পথচারী কাস্টমারের নামে সিম রেজিস্ট্রেশন করে রাখে এবং পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে কৌশলে উক্ত সিমে অপর কোনো অপরিচিত ব্যক্তির নামে বিকাশ/নগদ নম্বর তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রতারক লোকদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতারক চক্রের সদস্য হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। 

আসামি মো. লিটন বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ টাকায় রুপান্তর করে। সে দীর্ঘদিন অবৈধভাবে বিকাশে লেনদেন করে অজ্ঞাত প্রতারক চক্রকে ডিজিটাল ডিভাইসে প্রবেশ করে টাকা আত্মসাতে সহায়তা করে আসছে।

বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রতারণা চালিয়ে আসছে। ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন নামে এক ব্যক্তির মামলার অনুসন্ধানে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। প্রাথমিকভাবে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

হাসিব আল আমিন/এমএএস