ফরিদপুর শহরের আলীপুর মহল্লায় অবস্থিত কবরস্থানে মধ্যরাতেও অর্ধশতাধিক ভিক্ষুক দানের টাকা পাওয়ার আশায় বসে রয়েছেন।

রোববার রাত (২৬ ফেব্রুয়ারি) আড়াইটার দিকে গোরস্থানের সামনে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে ভিক্ষুক ও স্থানীয় রিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর শবে-বরাত ও শবে-কদরে এই কবরস্থান এলাকায় অর্ধশতাধিক ভিক্ষুকের বিচরণ চোখে পড়ে। বছরের এই দু’দিন মূলত সারারাত কবরস্থানের গেট খোলা থাকে স্বজনদের দোয়া করার জন্য। 

সারারাত ধরে শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা শবে-বরাতের নামাজ আদায় করে শহরের কেন্দ্রীয় এই কবরস্থানে ছুটে আসছেন স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে। বিশেষ ফজিলতের আশায় মুসল্লিরা স্বজনদের কবর জিয়ারত শেষে যার যার সামর্থমত দান করছেন ভিক্ষুকদের। এজন্যই মূলত ভিক্ষুকদের বাড়তি ভিড়।

শহরের গোয়ালচামট এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা জিসান আহমেদ (৩৬) জানান, ছয় বছর আগে তার বাবা মারা যান। শহরের ওয়্যারলেস পাড়া এলাকার একটি মসজিদে তিনি এশার নামাজের পর শবে-বরাতের নামাজ আদায় করেছেন। এরপর বাবার কবর জিয়ারত করতে কবরস্থানে এসেছেন।

শহরে গত ৪-৫ বছর ধরে রাতে রিকশা চালান সালথার কুমারকান্দা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মোল্লা (৩৮)। তিনি বলেন, প্রতি বছর শবে-বরাত আর শবে-কদরের রাতে শত শত ভিক্ষুক এখানে ভিড় জমায়। সারারাতই মুসল্লিরা তাদের স্বজনের কবর জিয়ারত করতে আসেন। জিয়ারত শেষে  কবরস্থান থেকে বের হয়ে ভিক্ষুকদেরও ভিক্ষা দেন মুসল্লিরা। এজন্য এই দু’দিনে এশা থেকে ফজর পর্যন্ত ভিক্ষুকদের ভিড় দেখা যায়।

রাত আড়াইটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, অর্ধশতাধিক ষাটোর্ধ্ব নারী-পুরুষ কবরস্থানের সামনে ভিক্ষা করতে এসেছেন। সেখানে অর্ধেকের বেশিই নারী। 

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা শহরের বিভিন্ন মোড়ে ভিক্ষা করেন। বিশেষ এই দু’দিনে কবরস্থানে মুসুল্লিদের ভিড় বেশি থাকে। তারা প্রায় সবাই কিছু না কিছু টাকা দেন স্বজনদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে। তাই তারা এই দ ‘দিন এখানে ভিড় করেন ফজর পর্যন্ত। এতে একেকজনের অন্যান্য দিনের চেয়ে ২-৩ গুণ বা তারও বেশি আয় হয়।

জহির হোসেন/কেএ