ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ১২ বছর বয়সী সৎ বোনকে দিয়ে জোরপূর্বক দেহব্যবসা করানোর অভিযোগ উঠেছে ভাই ও ভাবির বিরুদ্ধে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সেই সৎ বোনোর ভাই-ভাবিকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। 

অভিযুক্তরা হলেন, ভাই সোলেমান মিয়া (৪০) ও ভাবি সেলিনা আক্তার (৩০)। শিশুর পিতা মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে কসবা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহাম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিশুর পিতা ও মামলার বরাত দিয়ে ওসি রাজু আহাম্মেদ জানান, শিশুর পিতা মোশারফ হোসেন দুই বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তান সোলেমান মিয়া ও দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান ওই শিশুটি। সোলেমান মিয়া কসবা সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতে চায়ের দোকান চালান। শহরের শীতল পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। 

দুই মাস আগে সোলেমান মিয়া হঠাৎ করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে তার সৎ ছোট বোনকে শহরের বাসায় নিয়ে আসেন। সোলেমান মিয়া তাকে জানান, ছোট বোনকে লেখাপড়া করানোসহ বিয়ে দেওয়ার সব ব্যবস্থা করবেন। বাবা মোশারফ হোসেন সরল বিশ্বাসে বড় ছেলের সঙ্গে মেয়েকে তার বাসায় পাঠিয়ে দেন। 

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার সময় শিশুটি গ্রামের বাড়ি হরিপুরে বাবার কাছে চলে যায়। এত রাতে মেয়ে একা চলে আসায় বিস্মিত হয়ে কারণ জানতে চাইলে তাকে সে কিছুই বলেনি।

পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি ছেলে সোলেমান মিয়া আবার তার সৎ বোনকে আনতে গ্রামের বাড়ি গেলে তার সঙ্গে আসতে অস্বীকৃতি জানায়। কেন বড় ভাইয়ের সঙ্গে যাবে না, জিজ্ঞাসা করলে তখন সে জানায়, গত দু মাস ধরে ওই বাসায় রাতের বেলায় বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়। সে এসব কাজ করতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর করা হতো। তাই সে রাতের আঁধারে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। এ ঘটনা শোনার পর শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার শরীরে মারধরের চিহ্ন পাওয়া যায়।

ওসি বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে থানায় এসে ছেলে ও বউসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন শিশুর বাবা। 

অন্য আসামিরা হলেন, আয়নাল হক (২৬), শান্ত মিয়া (২৩) ও চাইনিজ নামের এক ব্যক্তি (২৪)। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

শিশুর পিতা মোশারফ হোসেন বলেন, ভাই ও ভাবি হয়ে ছোট বোনের এমন সর্বনাশ করবে আমি ভাবতেও পারিনি। পরিবারে অভাব-অনটনের কারণে সরল বিশ্বাসে মেয়েকে ছেলের বাসায় পাঠিয়েছিলাম। প্রাণ বাঁচাতে আমার শিশু মেয়েটি রাতের আঁধারে বাড়ি চলে আসে। আমি তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।

মাজহারুল করিম অভি/কেএ