নোয়াখালীরর সোনাইমুড়ীতে সুন্নতে খৎনা করার সময় শাহাদাত হোসেন (৭) নামের এক শিশুর পুরুষাঙ্গের সামনের অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হাজামকে (খৎনাকারি) আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার নদনা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এরপর সন্ধ্যায় শিশুটিকে পুরুষাঙ্গের কাটা অংশসহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন সোনাইমুড়ী উপজেলার নদনা ইউনিয়নের বুরপিট গ্রামের বুরপিট দক্ষিণ সরকার বাড়ির নিজাম উদ্দিনের ছেলে। আটক হওয়া হাজাম (খৎনাকারি) জেলার সুবর্ণচর উপজেলার বাসিন্দা মামুন (৩৫)।

শাহাদাত হোসেনের চাচা কবির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাজাম মামুন সোনাইমুড়ীর বিভিন্ন স্থানে হেঁটে হেঁটে শিশুদের সুন্নতে খৎনা করতেন । আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে শিশু শাহাদাতকে খৎনা করানোর জন্য মামুনকে খবর দেওয়া হয়। পরে মামুন বাড়িতে এসে ক্ষুর দিয়ে খৎনার কাজ শুরু করেন । এ সময় শাহাদাতের পুরুষাঙ্গের সামনের (মাথা) অংশ কেটে মাটিতে ফেলে দেন তিনি।  এ সময় শাহাদাতের প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় পুরুষাঙ্গের মাথার কাটা অংশসহ শাহাদাতকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং মামুনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

 এ বিষয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তানভীর হায়দার ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাজাম দিয়ে খৎনা করতে গিয়ে ওই শিশুর পুরুষাঙ্গের সামনের অংশ কেটে ফেলে দেওয়া হয়। পরে রোগীর স্বজনেরা পুরুষাঙ্গের কাটা অংশসহ তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।  এখানে পুরুষাঙ্গের কাটা অংশ ফ্রিজআপ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢামেক হাসপাতালে সার্জারি করে কাটা অংশ জোড়া লাগানো হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে সোনাইমুড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খৎনা করাতে শিশুদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

এরআগে গত বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খৎনা করার সময় আল নাহিয়ান তানভীর (৮) নামে এক শিশুর পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে শাস্তিমূলক বদলি ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টকে (শিক্ষানবিশ) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিষিদ্ধ করা হয়। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।

হাসিব আল আমিন/এমটিআই