ওসির প্রত্যাহার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষেভ কর্মসূচি পালন করেছেন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন।

পরে দুপুরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী সাতদিনের জন্য ওসি ফখরুল ইসলাম কোনো কাগজে স্বাক্ষর করবেন না বলে আশ্বাস দিলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অবরোধ তুলে নেন।

এর আগে আজিজার রহমান নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার ভাতিজার জমির বিরোধ নিয়ে এক বৈঠকে প্যানেল মেয়র মামুনুর রশিদ চৌধুরী ও বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন সাহেদ ইসলামসহ (৩৫) বেশ কয়েকজন। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজার রহমান বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

এ ঘটনায় প্যানেল মেয়রের লোকজন সাহেদসহ ১০ আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার (২১ এপ্রিল)  দিনভর থানায় অবস্থান করেন। সেই সময় থানার ওসি ফখরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজার রহমান বলেন, সাহেদসহ তার বাহিনীর লোকজন লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আমাকে ও প্যানেল মেয়রকে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি নিয়ে মামলা হলেও অদৃশ্য কারণে ওসির দেওয়া আশ্বাসে কোনো কাজ হয়নি। ওসি আসামিদের গ্রেফতার না করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অপমানিত করেছেন। তাই তার অপসারণ দাবি করেছি।

এদিকে রাস্তা অবরোধ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালনকালে রাস্তার দুই পাশে শতশত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন, ফুলবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ফুলবাড়ি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওসি আপাতত অফিশিয়ালভাবে কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর করবেন না এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে তাকে প্রত্যাহার করা হবে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, যে বিষয় নিয়ে আপনারা বিক্ষোভ করছেন সেই বিষয়ে ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে এখন থেকে ওসি সাহেব আগামী সাতদিনের জন্য অফিশিয়াল দায়িত্বে থাকবেন না। তার কাজগুলো সার্কেল এবং ওসি (তদন্ত) করবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে উনারা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিরু সামসুন্নাহার, ইউপি চেয়ারম্যান উপাধক্ষ শাহ আব্দুল কুদ্দুস,পৌর প্যানেল মেয়র মামুনুর রশিদ, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধ মো. এছার উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাশেম মন্ডল প্রমুখ। 

এছাড়াও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা সবুজ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মুশফিকুর রহমান রিয়াদ, সরকারি কলেজ শাখার সহ-সভাপতি নাসির মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মাহাবুর রহমান/আরএআর